বয়সে আজমত উল্লাহ জনপ্রিয়তায় জাহাঙ্গীর

বয়সে আজমত উল্লাহ জনপ্রিয়তায় জাহাঙ্গীর

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী নিয়ে মন ভরছে না আওয়ামী লীগের। আজ সন্ধ্যায় মনোনয়ন বৈঠকে হতে পারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত। সবার চোখ এখন ওই দিকে। কে হচ্ছেন, আজমত উল্লাহ খান ও জাহাঙ্গীর আলমের মধ্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তবে এ নিয়ে আনুগত্য সঙ্কটে পড়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। চরম দলীয় ক্ষোভের আশঙ্কা করে দলটি ভাবছে, যিনি মনোনয়ন পাবেন না, তিনি সিদ্ধান্ত মানবেন কি না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগে স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের বেশিরভাগ সদস্য আজমত উল্লাহ খানকে মেয়র পদে চান। আবার শহরে জাহাঙ্গীর আলমের জনপ্রিয়তার কথাও বলছেন অনেকে। আজমত উল্লাহর ভোট ব্যাংক টঙ্গীকেন্দ্রিক, গাজীপুর শহরে আজমত উল্লাহর ভোট কম। অন্যদিকে গাজীপুর শহরে জাহাঙ্গীরের ভোট বেশি।

অন্যদিকে আজমত উল্লাহর পক্ষের নেতারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করে আসা পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির আজমত উল্লাহ খান দলীয় মনোনয়ন না পেলে দলীয় রাজনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। এদিকে পোশাক ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠন জাহাঙ্গীর আলমকে মনোনয়ন না দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে বলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র দাবী করছে। তবে এ বিষয়ে ব্যবসায়ী নেতারা সরাসরি কিছু বলতে চাইছেন না। জাহাঙ্গীর এক সময় বড় ঝুট ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এখন তারও পোশাক কারখানা রয়েছে।

ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী মহলে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থানের কথা জানিয়েছে। গাজীপুরে অনেক পোশাক কারখানা থাকায় এসব ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো ভোটের বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। তাই তাদের অনুরোধ উপেক্ষা করা হবে কি না, সেটি নিয়েও ভাবনায় আওয়ামী লীগ। জাহাঙ্গীরের বিষয়ে কেন কেন আপত্তি সেটা অবশ্য আওয়ামী লীগের নেতারা স্পষ্ট করতে চাইছেন না। একজন নেতা বলেন, ‘বিষয়টি আপনারা অনুমান করে নেন। এর বাইরে আমার আর কিছু বলার নেই।’

পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর একজন নেতাও বিষয়টি নিয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তিনি কেবল বলেছেন, ‘আমরা চাইছি অন্য কেউ মনোনয়ন পাক। সেটা আমরা সরকারকে জানিয়েছি।’আগামী ১৫ মে ভোট হবে গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনে। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে ১২ এপ্রিলের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে আর প্রার্থী বাছাইয়ে আজ হবে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক।

মহানগরে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেতে চাইছেন ১০ জন। তারা হলেন: মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমতউল্লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম, মতিউর রহমান, কামরুল আহসান সরকার রাসেল, সুমন আহমেদ শান্ত বাবু, কাজী আলিম উদ্দিন, আব্দুর রউফ নয়ন, ওয়াজউদ্দিন মিয়া ও শামসুল বারী।

তবে আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, পরিধির দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বড় সিটি করপোরেশনে মনোনয়নের জন্য আওয়ামী লীগের বিবেচনায় আজতমউল্লাহ খান জাহাঙ্গীর আলম। এই দুইজনের একজনকেই দেয়া হবে নৌকা প্রতীক।

আজমত উল্লাহ খান এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন স্থানীয় সরকারের সঙ্গে কাজ করেছি। আমার বেশ অভিজ্ঞতা আছে। আমি দীর্ঘদিন টঙ্গী পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। সিটি করপোরেশনের গত নির্বাচনের পর থেকেই আমি মাঠে কাজ করছি। এখনো আছি। আমার বিশ্বাস দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।’

জাহাঙ্গীর আলমের সমর্থকরা প্রচার করছেন, তাদের নেতা মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে দলের সবুজ সংকেত পেয়েছেন। গত ৩১ মার্চ তফসিল ঘোষণার পর থেকে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এই প্রচারের পাশাপশি জাহাঙ্গীর নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে তাকে সমর্থন দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।