ভোট শুরুর পর বুথে ঢুকে ৪৫টি ব্যালটে নৌকায় সিল!

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একটি ভোটকেন্দ্রের একটি বুথে ঢুকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে সিল মারার পর সেখানে ভোট বন্ধ করে দিয়েছেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা।

ঘটনাটি ঘটেছে নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ফাতিমা উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে এক নম্বর বুথে কয়েকজন ঢুকে ৪৫টি ব্যালটে নৌকা মার্কায় সিল দেন বলে জানিয়েছেন ওই কেন্দ্রের নির্বাচনী কর্মকর্তা। পরে সেখানে ভোট বন্ধ করে দেয়া হয়।

ওই কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার রিতেশ বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘কিছু লোক হঠাৎ বুথে ঢুকে আমাদের সরিয়ে নৌকা মার্কায় সিল মারে। পরে আমি বিষয়টি প্রিজাইডিং অফিসারকে জানাই। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ভোট বন্ধ আছে।’

প্রিজাইডিং অফিসার জিয়াউল হক বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটার পরপরই আমরা ভোট বন্ধ রেখেছি। বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছে। তিনি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছিলেন।’

সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট শুরু হয়েছে খুলনায়। মঙ্গলববার সকাল আটটা থেকে ২৮৯টি কেন্দ্রের এক হাজার ৫৬১টি ভোটকক্ষে শুরু হয় ভোট। এই নির্বাচনে চার লক্ষ ৯৩ হাজার ৯৩ জন ভোটার রয়েছেন।

সেখানে একজন মেয়র ছাড়াও ৩১টি ওয়ার্ডে একজন করে সাধারণ কাউন্সিলর এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা।

এদিকে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট দিয়েও ৩০টি কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু্। সরকারদলীয় সমর্থকদের কারণে প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটাররা শঙ্কায় রয়েছে। বলেছেন, ভোট ডাকাতি হলে ফলাফল মেনে নেবেন না।

সকাল আটটা ৪০ মিনিটের দিকে ভোট দিনে নগরীর রহিমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিকে যান মঞ্জু। এরপর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর থেকেই কর্মী-সমর্থকদের প্রচারে বাধা দেয়ার অভিযোগ করে আসছিলেন। ভোটের আগের রাতেও রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউনুচ আলীর কাছে এই অভিযোগ করে খুলনার পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবির এবং মহানগরের পাঁচ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

মঞ্জু বলেন, ‘খুলনাবাসী আজকের দিনটির জন্য অপেক্ষা করেছিল। আশা করছি অবাধ, সুষ্ঠু ‍ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। কিন্তু গত কয়েকদিন যে পরিবেশ ছিল সেটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়।’ মঞ্জু প্রথমে ২০ থেকে ২৫টি এবং কিছুক্ষণ পরেই ৩০টি কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ করেন।

বিএনপির প্রার্থী বলেন, ‘সকাল থেকে ২০ থেকে ২৫টি কেন্দ্র থেকে আমাদের এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। সরকারদলীয় সমর্থকরা এসব কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে বলব দ্রুত এসব কেন্দ্রে আমার এজেন্টদের ঢুকতে দেয়ার ব্যবস্থা করুন।’