খালেদার মুক্তি নিয়ে আবার সংশয় তার আইনজীবীর

আইনি প্রক্রিয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আদৌ মুক্ত করা যাবে কি না, এ নিয়ে আবারও সংশয় প্রকাশ করেছেন তার একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী। তবে কোন প্রক্রিয়ায় তার মুক্তি সম্ভব, সেটি বলেননি তিনি।

সোমবার (২ জুলাই) কুমিল্লার এক মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত করে আপিল বিভাগের আদেশের পরে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষের সামনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

কুমিল্লায় বাসে পেট্রোল ঢেলে ৮ জন হত্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত রেখেছেন আপিল বিভাগ।

একই সঙ্গে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টের দেওয়া রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, কুমিল্লায় একই ঘটনা থেকে দুটি মামলা হয়েছিল। হাইকোর্ট বিভাগ আমাদের জামিন দিয়েছিল। সে জামিনাদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল দায়ের করে। তার প্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে একটি মামলার গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলেন হাইকোর্টকে এবং জামিন থাকবে বলেও রায় দেন আদালত। কিন্তু আজকে অত্যন্ত আশ্চর্যজনকভাবে একই ঘটনায় আরেকটি মামলায় জামিন স্থগিত করে আদেশ দিয়েছেন। জামিন প্রশ্নে দেওয়া রুল প্রথমে দুই সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টকে নিষ্পত্তি করতে বলেন। পরে অ্যাটর্নি জেনারেলের আবেদনে চার সপ্তাহ সময় বাড়িয়ে দেন আপিল বিভাগ। এটা অত্যন্ত দু:খ জনক।

ছয় মামলার মধ্যে একটিতে হাইকোর্টের পর আপিল বিভাগও জামিন দিয়েছে খালেদা জিয়াকে। কুমিল্লায় বাসে পেট্রল বোমা হামলা চালিয়ে আট জনকে হত্যার ঘটনায় করা এক মামলায় হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশ আজ স্থগিত করে দিয়েছে আপিল বিভাগ।

সর্বোচ্চ আদালতের আদেশের পরে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষের সামনে প্রতিক্রিয়া জানান খন্দকার মাহবুব। এর মধ্যে তার মনে সংশয় জেগেছে আদৌ তার নেত্রীর মুক্তি সম্ভব নয়।

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে থাকা আরও একটি মামলায় হাইকোর্টের দেয়া জামিন আপিলে স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর সোমবার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেন খালেদার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।

আদালতের আদেশের পর এর আগেও একাধিকবার খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব কি না, এ নিয়ে সংশয়ের কথা জানিয়েছিলেন মাহবুব। বিএনপি নেতারাও নানা সময় একই ধরনের কথা বলছেন। তারা কঠোর আন্দোলনেরও হুমকি দিচ্ছেন।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি তার নেত্রীর প্রায় প্রতিটি মামলায় উচ্চ আদালতে আইনি পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ড মাথায় নিয়ে কারাগারে যাওয়া খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়েছে আপিল বিভাগ। কিন্তু তার বিরুদ্ধে আরও যে ছয়টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে, সেগুলো তার মুক্তিতে বাঁধা হয়ে দেখা দিয়েছে।

‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমার মনে হয় সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে জেলখানায় তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। আইনি প্রক্রিয়ায় আমরা আদালতের কাছ থেকে কোনো রকম ন্যায়বিচার পাবো এ বিশ্বাস দিন দিন ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে।’

কুমিল্লায় নাশকতার মামলায় জামিন স্থগিত এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের আবেদনে চার সপ্তাহ সময় বাড়িয়ে দেয়ার আদেশকে আশ্চর্যজনক উল্লেখ করে মাহবুব বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।