ভারতীয় হাইকমিশনের ভূমিকা নিয়ে রিজভীর প্রশ্ন

ব্রিটিশ আইনজীবী লর্ড কার্লাইলকে ভারতে আসতে না দিলে প্রমাণিত হবে বেগম খালেদা জিয়ার সাজার পেছনে সে দেশের হাইকমিশনের নেপথ্য ভূমিকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

রবিবার (৮ জুলাই) নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গতকাল একটি দৈনিক পত্রিকায় নয়াদিল্লীর একটি উচ্চ পর্যায়ের সূত্রকে উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আইনী পরামর্শক লর্ড কার্লাইলকে ভারতে ঢোকার অনুমতি না দিতে নয়াদিল্লীতে জোরালো সুপারিশ পাঠিয়েছে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিকট আমাদের জিজ্ঞাসা, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন বাংলাদেশের এখন কোন দলের মুখপাত্র?’

তিনি বলেন, ‘লর্ড কার্লাইল চলতি সপ্তাহেই নয়াদিল্লী সফরে ১৩ জুলাই ফরেন করেসপন্ডেন্ট ক্লাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা ও কারাদণ্ডের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বক্তব্য দেয়ার কথা। যদি ঢাকাস্থ হাইকমিশনের জোরালো সুপারিশের কারণে লর্ড কার্লাইলের ভিসা দেয়া না হয় তাহলে এটা প্রমাণিত হবে যে, বেগম জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাদণ্ড দিতে হাইকমিশনের নেপথ্য ভূমিকা রয়েছে।’

‘ভারতীয় হাইকমিশনের এই ভূমিকা দুঃখজনক এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আগ্রাসী হস্তক্ষেপ। বাংলাদেশের একটি ভোটারবিহীন সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের ভূমিকা ঔপনিবেশিক শাসকদের ন্যায়, যেন তারা বাংলাদেশে তাদের প্রতিভূদের টিকিয়ে রাখতে উঠেপড়ে লেগেছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন যদি ঔপনিবেশিক শাসনের গভর্নর হাউজে পরিণত হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে থাকে তাহলে বুঝতে হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিপন্ন ও সার্বভৌমত্ব অতি দুর্বল।’

রিজভী বলেন, ‘অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর আরেকজন উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ভারত সফরে গিয়ে সেখানে একটি শীর্ষস্থানীয় ‘থিংক ট্যাংক’ এর আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে প্রশ্নের উত্তরে বলেন, বিএনপি ভারতের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করে, বিএনপি হচ্ছে চীন ও পাকিস্তানপন্থী। এইচ টি ইমাম এর উদ্ভট বেহায়াপনায় বাংলাদেশিরা হতবাক ও স্তম্ভিত। জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী সরকারকে পুনরায় ক্ষমতায় রাখতে সেখানে বিভিন্ন নীতি নির্ধারকদের কাছে নতজানু হয়ে লেজ নাড়িয়ে ভারতীয় কৃপা আদায়ের জন্য এইচ টি ইমামের মতো আওয়ামী মন্ত্রী ও নেতারা এমন ন্যাক্কারজনক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করছেন যা বাংলাদেশে বিরল।’

‘এইচ টি ইমাম আরও বলেছেন-ভারত বিএনপিকে সুযোগ দেবে না। এইচ টি ইমাম সাহেবকে বলতে চাই- ভারত সুযোগ দেয়ার কে? বাংলাদেশের মালিক বাংলাদেশের জনগণ। সুযোগও দেবে বাংলাদেশের জনগণ।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতীক খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটক রেখেছে এই সরকার। তার মুক্তির দাবিতে আগামীকাল সকল বাধাকে অতিক্রম করে প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে সমাবেত হবেন। আমরা না খেয়ে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রতীকী অনশন পালন করব। অনশনের স্থান ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট ও মহানগর নাট্যমঞ্চ।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহজাদা মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, তাঁতী বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম খান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক বেলাল আহমেদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য শামছুজ্জামান সুরুজ, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।