বাংলাদেশের আপত্তি সত্ত্বেও দিল্লি যাচ্ছেন খালেদার আইনজীবী

বাংলাদেশ সরকারের আপত্তি সত্ত্বেও ভারতের দিল্লিতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্রিটিশ আইনজীবী লর্ড কার্লাইলের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি পুরোপুরি বাতিল হচ্ছে না।

১০ জুলাই, মঙ্গলবার বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দিল্লির ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাব লর্ড কার্লাইলের শুক্রবারের নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন বাতিল করে দিলেও শহরের অন্য কোনো জায়গায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হবেন ব্রিটিশ এই আইনজীবী।

বাংলাদেশে কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি কেন ‘সাজানো’ ও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’, সেটাই তিনি ওই সংবাদ সম্মেলনে ব্যাখ্যা করার কথা। কিন্তু লর্ড কার্লাইল যদি ভারতের মাটিকে ব্যবহার করে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক প্রচার চালান, ঢাকা সেটা আদৌ পছন্দ করবে না বলে ইতোমধ্যেই দিল্লিকে জানানো হয়েছে।

কী বলছে বাংলাদেশ সরকার

নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানায়, লর্ড কার্লাইল দিল্লিতে আসছেন, এমন খবর জানাজানি হওয়ার পরই ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন ভারতের কাছে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে।

এমনকি দুই-তিনদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ভারত সফরে গিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর এবং রাম মাধবের মতো বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় প্রসঙ্গটি উঠিয়েছেন।

লর্ড কার্লইলকে ভারতে সংবাদ সম্মেলন করতে দেওয়ার বিরুদ্ধে আপত্তি সম্পর্কে ঢাকার পক্ষ থেকে যে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, সেটি হলো, লর্ড কার্লাইল খালেদা জিয়ার হয়ে মামলা লড়তে আর্থিকভাবে চুক্তিবদ্ধ। ফলে দিল্লিতে তিনি যেসব কথা বলতে আসছেন, সেগুলো একটা ‘পেইড রাজনৈতিক ক্যাম্পেইনের অংশ’, যার নিশানা হলো বাংলাদেশ সরকার।

ঢাকার পক্ষ থেকে এমন কথাও বলা হয়েছে যে, এখন বাংলাদেশ যেভাবে তাদের ভূখণ্ডকে ভারতবিরোধী কার্যকলাপের জন্য ব্যবহৃত হতে দেয় না, সেভাবে ভারতেরও উচিত নয় দিল্লির মাটিকে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারের জন্য ব্যবহৃত হতে দেওয়া।

বাংলাদেশের একটি শীর্ষ কূটনৈতিক সূত্র বলেছে, ‘লর্ড কার্লাইল ভারতে এসে তাজমহল বেড়াতে যান, ইন্ডিয়া গেটে হাওয়া খান-আমাদের কিছুই বলার নেই। কিন্তু দিল্লি সফরকে তিনি যদি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারে কাজে লাগান-তাও আবার পয়সা নিয়ে-সেটা মোটেই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে কোনো ভাল সংকেত দেবে না।’

চাপের মুখে ভেন্যু বাতিল

লর্ড কার্লাইল চেয়েছিলেন ১৩ জুলাই দিল্লির ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাব বা এফসিসিতে তিনি মিডিয়ার মুখোমুখি হবেন এবং সেভাবে ওই ক্লাবের মিলনায়তনটি প্রাথমিকভাবে বুকিংও করে রেখেছিলেন। কিন্তু একই দিনে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতও ক্লাবে আসছেন, এই যুক্তিতে শেষ মুহূর্তে এফসিসি তার বুকিং বাতিল করে দিয়েছে।

ফলে লর্ড কার্লাইল এখন দিল্লিতেই অন্য কোনো জায়গায় সাংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হচ্ছেন। আর তার দিনটাও একদিন এগিয়ে এনে ১২ জুলাই বৃহস্পতিবার করা হয়েছে।

সোমবার রাতে লর্ড কার্লাইন জানিয়েছেন, তার দিল্লি সফর মোটেও বাতিল হচ্ছে না এবং খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে মামলা নিয়ে তিনি কথা বলতে চান, সেটাও দিল্লিতে অবশ্যই বলবেন।