জোট বেঁধে বিশৃঙ্খলা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: তোফায়েল আহমেদ

আন্দোলন করার গণতান্ত্রিক অধিকার সবার আছে। তবে জোট বেঁধে বিশৃঙ্খলা করলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নিবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ‘বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন শেষে মন্ত্রী একথা বলেন। প্রদর্শনীটির আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, আজকের খবরের কাগজে দেখলাম আমাদের বিরুদ্ধে জোট গঠন করা হবে। জোট করে তারা আন্দোলন করবেন। ভালো কথা। গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু আন্দোলনের নামে কেউ যদি বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করে তাহলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ এর মতো হরতাল অবরোধের নামে অর্থনীতিকে ধ্বংসের চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে। এই সরকার দৈনন্দিন কাজ করবে। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। আমরা আশা করব সেই নির্বাচনে সকলে অংশগ্রহণ করবে। কেউ যদি নির্বাচনে না আসে আমাদের কিছু করার নেই। তবে আমি মনে করি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট যদি নির্বাচনে না আসে তাহলে তারা অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে। সত্তর সালে মাওলানা ভাসানী সাহেবের দল ন্যাপ ইলেকশন করেনি। এখন সেই দলের অস্তিত্ব নেই।

ডাকসুর সাবেক এ ভিপি বলেন, পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারেনি। কিন্তু বাংলার মীর জাফর খন্দকার মোশতাক, জিয়াউর রহমান ও দেশি-বিদেশি দোসররা ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। নিষ্পাপ রাসেলকে হত্যা করে। যাতে বঙ্গবন্ধুর রক্তের কেউ এই দেশের নেতৃত্ব দিতে না পারে। দুই কন্যা বিদেশ ছিলেন না থাকলে তারাও থাকতেন না। সেই জ্যেষ্ঠ কন্যার হাতে আমরা আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দিয়েছি। নিষ্ঠার সঙ্গে, দক্ষতার সঙ্গে সেই পতাকা হাতে নিয়ে ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বভার গ্রহণ করে স্বাধীনতার চেতনা ও মূল্যবোধ, যেটা জিয়াউর রহমান ধ্বংস করেছিল তিনি সেটিকে পুনুরুদ্ধার করেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের পথ তিনি উন্মুক্ত করেছেন। বিএনপি ২০০১ এ ক্ষমতায় এসে দেশকে পেছনে নিয়ে গেছে আবার ২০০৮ এ নির্বচনে জয়ী হয়ে গত প্রায় ১০ বছরে শেখ হাসিনা দেশকে কোথায় নিয়ে গেছেন! বিদেশে যারা ৭১ এ বলেছিল বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি, বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর মধ্যে দরিদ্র দেশের মডেল। তারাই আজকে বলে, বাংলাদেশ ইজ নাথিং ইট ইজ এ রোল মডেল অব ইকোনোমিক রোল মডেল।

তিনি আরও বলেন, আজকে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রুপান্তরিত হতে চলেছি। আমরা ইতোমধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে প্রবেশ করেছি। আমাদের সামনের দুটো বছর একটা স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি আর একটা জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী। এই দুটো বছর সামনে রেখে আমরা ইতোমধ্যে পরিকল্পনা শুরু করেছি। সুতরাং আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন দেশের উন্নয়ন হয়। বিশ্বব্যাংক যখন টাকা বন্ধ করে দিল, জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বললেন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু করব। আজকে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু দৃশ্যমান। আমরা মেগা প্রজেক্ট করেছি মাতার বাড়ি, মেট্রোরেল, এলিভেটর এক্সপ্রেস, কর্ণফুলি প্যানেল। আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের নেতা নন তিনি আন্তর্জাতিক বিশ্বে অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেতা। তাকে মাদার অব হিউম্যানিটি, স্টার অব ইস্ট আখ্যায়িত করা হয়।

আলোকচিত্র প্রদর্শনী শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, শামসুল হক ফাউন্ডেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট আফিয়া বেগম, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী প্রমুখ।