হয় রাস্তা নয়তো জেলখানা: দুদু

জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, দেশের  গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে হয় রাস্তায় থাকতে হবে নয়তো জেলখানায়। এই দুটির একটি স্বীকার করে নিতে পারলে আমাদের মুক্তি কেউ ঠেকাতে পারবে না।

মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে শহীদ জিহাদ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত ‘শহীদ জিহাদের ২৮তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণ সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘নিজের কথাগুলো যদি বলি দলের বিরুদ্ধে চলে যেতে পারে। সরকারি লোকজন যখন স্বীকার করছে খালেদা জিয়ার অবস্থা ভালো না। তার পায়ের অবস্থা, হাতের অবস্থা,কাঁধের অবস্থা ভয়ানক খারাপের দিকে চলে গেছে। এ অবস্থায় আমাদের যে ধরনের প্রতিবাদ করার দরকার ছিল, যে ধরনের আন্দোলন হওয়ার কথা ছিল আমরা কি তা করতে পেরেছি?

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন,‘একদিন এক ঘণ্টা যতটুকু সময়ই হোক না কেন আমাদেরকে রাস্তায় নামতে হবে। রাস্তায় আপনি নামেন দেশবাসী আমাদের সঙ্গে আছে। আগে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে রাস্তায় নামতে হবে। ছাত্র, যুবক, কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষকে নামতে হবে।

হ্যাঁ, মাওলানা ভাসানী এখন নাই? দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াতো আছেন, তারেক রহমানতো আছেন এবং আমাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরতো আছেন। আসুন ভাই শেষ বারের মতো একবার হয় রাস্তায় থাকি না হয় জেলখানায় থাকি। এ দুটো ত্যাগ যদি আমরা স্বীকার করে নিতে পারি আমাদের এবং বেগম জিয়ার মুক্তি কেউ ঠেকাতে পারবে না’।

বিগত সময়ের ছাত্র আন্দোলন সর্ম্পকে দুদু বলেন, ‘রাস্তায় নামে নাই আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এমন ইতিহাস আমার জানা নাই। এদেশে যা কিছু হয়েছে, এবং ভালো কিছু হয়েছে সবই ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে হয়েছে। এখনো যদি ভালো কিছু করতে হয় ছাত্রদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সেজন্য তাদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে, তাদের সমস্যাগুলো দেখতে হবে, তাদেরকে যাতে ভূমিকায় আনা যায় সে চেষ্টা করতে হবে’।

তিনি বলেন,  ‘অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবেশ, ডাকসু নির্বাচন এবং এর মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাবো’।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশে ডিজিটাল আইন হয়েছে এটা নিয়ে এখন আলোচনা হচ্ছে। আসলে ডিজিটাল আইন না বাংলাদেশে বাকশাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ২৫ শে জানুয়ারি যে বাংলাদেশ আমরা দেখেছি, যে রক্ষীবাহিনী আমরা দেখেছি, সেটির অন্য নামে এখন পুলিশ। রক্ষী বাহিনী যে আইনটা দিয়েছিল বিনা ওয়ারেন্টে যখন যাকে খুশি ঘরের মধ্যে ঘরের বাহিরে রাস্তায় ধরে নিয়ে যেতে এবং স্বীকারোক্তি আদায়ে শুধু রিমান্ড নয় মেরেও ফেলতো। সেটার পরিবর্তন কিভাবে হয়েছিল এটা আমরা জানি’।

তিনি বলেন,‘বাংলাদেশে এখন রাজনীতির মিনিমাম সুযোগটা নেই।আমরা অনেকে নির্বাচনের কথা ভাবছি। গণতান্ত্রিক রাজনীতির পরিবর্তনটা নির্বাচনের মধ্য দিয়েই হয় এগুলো আমরা বিশ্বাস করি’।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ডাকসু’র সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলমের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।

এছাড়াও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, ডি এল এর সভাপতি সাইফ উদ্দীন মনি, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসাদুর রহমান খান আসাদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।