‘বাবা-মা, ভাই, আত্মীয়-পরিজনকে হারিয়ে রাজনীতি করছি শুধু জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য’

আপনারা নৌকায় ভোট দিন, আমরা আপনাদের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জন করে দেব—এটা আমাদের জাতির কাছে ওয়াদা। বললেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ মঙ্গলবার রাজধানী প্যান প্যাসিফিক হোটেলে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার সময় জনগণের উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন।

আসন্ন নির্বাচনে দলের পক্ষে ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের চলমান উন্নয়নের ধারাকে যাতে কেউ ব্যাহত করতে না পারে সেজন্যই আওয়ামী লীগের আরও অন্তত পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার প্রয়োজন রয়েছে।

তিনি বলেন, আমি নিজে এবং দলের পক্ষ থেকে আমাদের যদি কোনো ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকে, সেগুলো ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখার জন্য দেশবাসী আপনাদের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি। আমি কথা দিচ্ছি, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আরও সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণ করব।

ইশহেতার ঘোষণার পর শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কথায় নয়, কাজে বিশ্বাস করি। আমাদের এবারের অঙ্গীকার, আমরা টেকসই বিনিয়োগ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করব। এটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেলে জনগণ কিছু পায়, সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা ও সমৃদ্ধির সকল সুযোগ এবং সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কাঙ্ক্ষিত ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতামুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব ইনশা আল্লাহ।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি একটি কথা এখানে বলতে চাই যে, আমার কোনো ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। বাবা-মা, ভাই, আত্মীয়-পরিজনকে হারিয়ে আমি রাজনীতি করছি শুধু জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য, এ দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য। এ দেশের সাধারণ মানুষ যাতে ভালোভাবে বাঁচতে পারে, উন্নত জীবন পায়, তাদের জীবনটাকে আরও উন্নত করা—এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য, একমাত্র কামনা। যে আদর্শ নিয়ে জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছিলেন, সেই আদর্শ আমি বাস্তবায়ন করতে চাই। আগামী ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী আমরা সাড়ম্বরে পালন করব। বাঙালি জাতির এই দুই মাহেন্দ্রক্ষণ সামনে রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগই পারবে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে দিতে, সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে।

ইশতেহারে জনবান্ধব আইন-শৃঙখলা বাহিনী গড়ে তোলা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ, দক্ষ, সেবামুখী ও জবাদিহিতামূলক প্রশাসন, মেগা প্রকল্পসমূহ দ্রুত বাস্তবায়ন, প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ, দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈষম্য হ্রাস করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা এসময় বলেন, প্রতিটি পরিবারের অন্তত একজন নিয়মিত রোজগারের নিশ্চয়তা থাকবে। কৃষি উপকরণের উপর ভর্তুকি অব্যাহতির পাশাপাশি বাড়ানো হবে। ২০২০ সালের মধ্যে সকলের জন্য বিদ্যুৎ নিশ্চয়তা করা হবে। ৫ বছরে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এবং ৫ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হবে।

ইশতেহারে তিনি আরও বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বরাদ্দের পাশাপাশি শিক্ষার মান বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে।