জামায়াত নেতাদের প্রার্থিতা বহাল নির্বাচন কমিশনে

    বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

    নির্বাচন কমিশন বিএনপির মনোনয়নে ধানের শীষের প্রার্থী হওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। ফলে জামায়াত নেতাদের প্রার্থিতা বহাল রয়েছে।

    রোববার কমিশন সভার পর ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ জানান, ‘জামায়াতের প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিলের আইনগত কোনও সুযোগ নেই।’

    রোববার বিকেল সাড়ে তিনটায় শুরু হয়ে মাগরিবের বিরতি শেষে সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত জামায়াতের প্রার্থীদের নিয়ে হাইকোর্টের রুলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসে কমিশন।

    বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে জামায়াত প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রসঙ্গে কমিশনের বৈঠকে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত আসে। তবে আইন পর্যালোচনা করে কমিশন তাদের প্রার্থিতা বাতিলের মতো কোনও আইনি ব্যাখ্যা পায়নি।

    এ বিষয়ে কমিশন থেকে যুক্তি দিয়ে বলা হয়, আরপিও অনুযায়ী তারা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল বিএনপির মনোনীত প্রার্থী। সে অনুযায়ী তারা দলটির প্রতীক হিসেবে ‘ধানের শীষ’ বরাদ্দ পেয়েছেন। তারা জামায়াত বা অন্য কোনও দলের কিনা সে বিষয়টি সুষ্পষ্ট নয়। ফলে প্রার্থী হিসেবে তারা জামায়াতের কিনা তা প্রমাণের সুযোগ নেই। এসব বিষয় বিবেচনা করে কমিশন মনে করে তাদের প্রার্থিতা বাতিলের কোনও সুযোগ নেই। সিদ্ধান্তটি কমিশন সোমবারের মধ্যে হাইকোর্টকে জানিয়ে দেবে।

    একাদশ জাতীয় নির্বাচনে দলটির রাজনৈতিক মিত্র বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ২২ জন এবং স্বতন্ত্র আরও তিনটিসহ মোট ২৫টিতে আসনে লড়ছেন দলটির নেতারা।

    জামায়াত প্রার্থীরা হলেন, দিনাজপুর-১ মোহাম্মদ হানিফ, দিনাজপুর-৬ মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-২ মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী-৩ মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ মাজেদুর রহমান সরকার, সিরাজগঞ্জ-৪ মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, পাবনা-৫ মাওলানা ইকবাল হুসাইন, ঝিনাইদহ-৩ অধ্যাপক মতিয়ার রহমান, যশোর-২ আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন, বাগেরহাট-৩ অ্যাডভোকেট আবদুল ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ অধ্যাপক আবদুল আলীম, খুলনা-৫ অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, খুলনা-৬ মাওলানা আবুল কালাম আযাদ, সাতক্ষীরা-২ মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৩ মুফতি রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা-৪ গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-১ শামীম সাঈদী, ঢাকা-১৫ ডা. শফিকুর রহমান, সিলেট-৬ মাওলানা হাবিবুর রহমান, কুমিল্লা-১১ ডা. আবদুল্লাহ মো. তাহের, চট্টগ্রাম ১৫ আ ন ম শামসুল ইসলাম ও কক্সবাজার-২ হামিদুর রহমান আযাদ।

    জামায়াতের ২৫ প্রার্থীর প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে সম্প্রতি হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, মো. আলি হোসেন, মো. এমদাদুল হক ও হুমায়ুন কবির। রিটে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে ২২ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনজন জামায়াত প্রার্থীর ভোটে অংশগ্রহণের ওপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়। আবেদনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশন সচিবকে বিবাদী করা হয়।

    তিন কার্যদিবসের মধ্যে রিটটি নিষ্পত্তির নির্দেশনা দিয়েছিল আদালত। বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে আজ বৈঠকে বসে সাংবিধানিক সংস্থাটি।

    চলতি বছরের ২৯ অক্টোবর রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে ২০১৩ সালে হাইকোর্টের রায়ে দলটির নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হয়।

    এদিকে আজকের বৈঠকে ব্যালট পেপার মুদ্রণ ও উচ্চ আদালতের রায়ে প্রার্থীশূন্য হওয়া আসনে পুনঃতফসিল বা প্রার্থী বদলে বিএনপির দাবির বিষয়েও আলোচনা হয়েছিল।