নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে দুর্নীতির ভয়াবহ রূপ আড়ালেঃরিজভী

প্রকাশিত রূপের চেয়ে দুর্নীতির মাত্রা আরও ভয়াবহ বলে দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতির মাত্রা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রিত বলে সব তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে না। কেবল টিআই-ই নয়, ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি গত সোমবার বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা গেছে শুধু ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর গত ১০ বছরে পাচার হয়েছে পাঁচ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এই দুর্নীতির টাকা আওয়ামী ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোকেরাই পাচার করেছে। সুতরাং তথ্যমন্ত্রী গণমাধ্যমকে ডেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সত্যকে আড়াল করতে পারবেন না।’

বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ‘তথ্যযন্ত্রী’ হয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘গতকাল তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন- ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট বিএনপির আমলে সঠিক ছিল, এখন মনগড়া। বাহ! বাহ! তাহলে বিএনপির আমলে জলবায়ুরও কী পরিবর্তন হয়েছে গেছে বর্ষাকালে বর্ষা হয় না, শীতকালে শীত পড়ে না, বসন্তকালে কোকিল ডাকে না। বিএনপির আমলে ডাকতো এখন ডাকে না- তার (তথ্যমন্ত্রী) কথা আমার এটাই মনে হচ্ছে।’

‘একই প্রতিষ্ঠান বিএনপির আমলে যেটা বলেছে সেটা সঠিক এখন বলছেন সেটা বেঠিক হয়ে গেলো। আসলে তথ্যমন্ত্রী এখন যেন তথ্যযন্ত্রীতে পরিণত হয়েছেন। তিনি তার তথ্যযন্ত্রের মাধ্যমে এমন আজগুবি তথ্য দেন তাতে শুধু দেশবাসীই নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও সবিস্ময়ে হতবাক হয়ে পড়ে।’

রিজভী বলেন, ‘ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণাসূচক এবার বাংলাদেশের অবস্থান ছয় ধাপ অবনমন ঘটেছে। সূচকের ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী (ভালো থেকে খারাপ) বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৯ নম্বরে। ১৮০ দেশের মধ্যে গতবার বাংলাদেশের অবস্থান ছিলো ১৪৩ নম্বরে। তথ্যমন্ত্রী টিআইয়ের এই প্রতিবেদনকে উদ্দেশ্যমূলক বলেছেন।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভুয়া ভোটের সরকার আরও জোরালোভাবে রাষ্ট্রের আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগকে একই কেন্দ্রের অধীনে করলো। রাষ্ট্রের ক্ষমতার ভারসাম্য ক্ষয় হতে হতে এখন ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। বিরোধী দল, মত ও বিশ্বাসের ওপর চলছে টার্গেট দমন-পীড়ন।নাগরিকদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ সংকুচিত হতে হতে এখন নিঃশেষিত হয়ে জনগণের বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্বে এসে উপনীত হয়েছে।’

‘রাষ্ট্রের মেশিনারিজ ভুয়া ভোটের সরকারের অনুকুলে এখন বীভৎস চেহারায় জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এক ব্যক্তি, এক দল নীতির বেপরোয়া আস্ফালন জনগণকে এখন আতঙ্কিত করে রেখেছে। জনগণকে পরাধীন করে এখন আওয়ামী লীগ উপনিবেশ কায়েম করেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, অধ্যাপক সাহিদা রফিক, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা মুনির হোসেন, আবদুল আউয়াল খান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।