গণশুনানির বক্তব্য বই আকারে প্রকাশ করা হবে: ড. কামাল

গণশুনানিতে প্রার্থীরা জনগণের উদ্দেশে বক্তব্য রেখেছেন। বিচারটা ট্রাইব্যুনালে হবে। আর গণআদালতে যে বক্তব্য আসবে সেগুলো পরে বই আকারে প্রকাশ করা হবে। সবার বক্তব্য রেকর্ড করা হবে। বললেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ‘একাদশ জাতীয় সংসদের তথাকথিত নির্বাচনের ওপর গণশুনানি’ শিরোনামে অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সকাল ১০টা থেকে গণশুনানি শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা শুনানি চলে।

ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা বিচারক নই। কোনও বিচার করার ক্ষমতা বা কর্তব্যও নেই আমাদের। আমরা এসেছি অনুষ্ঠানটা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য।

তিনি বলেন, ভোটাধিকার রক্ষা করার জন্য আমরা স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছিলাম। সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে লেখা আছে- জনগণ ক্ষমতার মালিক। এবার যে নির্বাচন হয়েছে, সেটি নিয়ে প্রার্থীদের অনেকে ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন।

এদিকে অনুষ্ঠানের শুরুতে পুরান ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের স্মরণে শোক প্রস্তাব পড়ে শোনান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এরপর নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং উপস্থিত সবাই নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় মোনাজাতে অংশ নেন।

ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সাতজন এই ‘শুনানি’পরিচালনা করছেন।

মিলনায়তনের মঞ্চে ড. কামাল হোসেনের পাশে ছিলেন অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, সাবেক বিচারক আকম আনিসুর রহমান খান, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ ও অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

এদিকে গণশুনানিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের উদাসীনতার কারণেই একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। দেশে গণতন্ত্র না থাকার কারণেই কারও কোনও জবাবদিহিতা নেই।

গণশুনানিতে অতিথিদের সারিতে উপস্থিত ছিলেন- জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবদীন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, শামসুজ্জামান দুদু, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. রেজা কিবরিয়া, নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এস এম আকরাম হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদারসহ প্রার্থীরা।

এর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি হওয়ার কথা থাকলেও গণশুনানির তারিখ পরিবর্তন করে ২২ ফেব্রুয়ারি নিয়ে আসা হয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরাও উপস্থিত রয়েছেন এ গণশুনানিতে।

বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, নাগরিক ঐক্য নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট একসঙ্গে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। ভোটের ৫৩ দিন পর জোটের প্রার্থীরা তাদের অভিযোগ ও তাদের অভিজ্ঞতা জানাতে এই গণশুনানিতে উপস্থিত হয়েছেন বলে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা জানান।