সকল ক্ষেত্রেই সরকারের দায়িত্বহীনতা প্রকাশ পেয়েছে : ড. কামাল

সরকারের কৃষিনীতি না থাকায় দেশে সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, এই সরকারকে দায়িত্বহীন সরকার বলা যেতে পারে। কৃষিনীতি, কৃষকদের নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা না থাকা এবং দেশে কৃষকের সঠিক সংখ্যা সরকারের কাছে না থাকায় কৃষিতে সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার (২২ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরাম আয়োজিত ‘কৃষক জনতা একহও সরকার হটাও-দেশবাঁচাও’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, মানুষের বোঝা দরকার অনির্বাচিত সরকারকে এভাবে বহন করায় সকল মানুষকে মূল্য দিতে হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। আজকে সংবিধান লঙ্গন করে জনগণের ওপর একটা সরকার চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এরা ইচ্ছা মতো বলে যাচ্ছে আমরা থার্ট টাইম পেয়ে গেলাম, আমি আরো ৫ বছরের জন্য আছি। এটা মানুষকে মূল্য না দিয়ে অবজ্ঞা করা।

তিনি বলেন, দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সরকার কৃষকের জন্য যা ঘোষণা করেছে তা তারা মানছে না। তারা ধান উৎপাদনের ব্যাপারে বক্তব্য রাখে কিন্তু ধান উৎপাদন হওয়ার পর কৃষকের উৎপাদন খরচের ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এই ব্যর্থতা শুধু কৃষকদের ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে নয়, সকল ক্ষেত্রেই এই দায়িত্বহীনতা প্রকাশ করছে।

সংবাদ স‌ম্মেল‌নে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সরকার ১০ লাখ টন চাল, দেড় লাখ টন আতপ চাল ও দেড় লাখ টন ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার প্রতি কেজি চাল ৩৬ টাকা। ধান ২৬ টাকা। সাধারণত বোরো চাষের জমি লিজ, জমি চাষ, মই দেয়া ও জমির চারপাশ কাটানো, ডিএপি ও পটাশ, ইউরিয়া সার ব্যবহার, নিড়ানো, পানি খরচ, কীটনাশক খরচ, জমি থেকে ধান উত্তোলন ভাড়া ও পাইট ইত্যাদিতে গড়ে ১ বিঘায় খরচ হয় (২২মণ) ১৬ হাজার ৩৬৫ টাকা। প্রতি মণ ধান উৎপাদন খরচ ৭৪৩ টাকা। কিন্তু তা বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা। লোকসান কমপক্ষে ১৪৩ টাকা।

গণফোরামের অভিযোগ, সরকার এ বছরের মে মাস থেকে ১৩ লাখ টন ধান চাল সংগ্রহের লক্ষ্য ঠিক করেছে কিন্তু  মে মাসের অর্ধেক পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২৬৯ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করেছে। কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, রংপুর, জয়পুরহাট, নওগাঁসহ বেশিরভাগ বড় বড় মোকামে ধান চাল কেনা বন্ধ রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিষয়ক সংস্থা ইউএসডি চলতি মাসের পরিস্থিতির ওপর যে প্রতিবেদন করেছে, সে অনুযায়ী গত এক বছরে বাংলাদেশের চালের উৎপাদন বেড়েছে ৭.২ শতাংশ আর এ বছর উৎপাদন হয় ৩ কোটি ৫৩ লাখ টন চাল। ধানের বাম্পার ফলন হবে সরকার তা জানতো, সেজন্য গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে ১ মাস আগে বোরো শুরু হবে বলে আগেই খাদ্য মন্ত্রী জানিয়েছেন। সে কারণে এবার ২৫ এপ্রিল থেকেই সরকারি নির্দেশ জারি করা হয়, মে মাস থেকে ধান ক্রয় করা হবে কিন্তু কাজের কাজ হয়নি, কিছুই হয়নি, সরকার ব্যর্থ হয়েছে।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণ‌ফোরা‌মের নির্বাহী সভাপ‌তি শুভ্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক রেজা কিব‌রিয়া প্রমুখ।