স্বাস্থ্যবিমা চালুর পরিকল্পনা আছে : প্রধানমন্ত্রী

দেশের জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্যবিমা চালু করার পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আমরা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য টাঙ্গাইল জেলায় মধুপুর, ঘাটাইল ও কালিহাতি উপজেলায় ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে স্বাস্থ্যবিমা কার্যক্রম চালু করেছি।’

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির (জাপা) সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর-পর্ব টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য সরকার হেলথ কেয়ার ফাইন্যান্সিং স্ট্র্যাটেজি ২০১২-২০১৩ প্রণয়ন করেছে। প্রণীত স্ট্যাটেজির অধীনে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে প্রাথমিকভাবে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি (এসএসকে) শীর্ষক পাইলট কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এটি একটি পাইলট প্রকল্প। এসএসকে কর্মসূচির আওতায় টাঙ্গাইল জেলার তিনটি উপজেলা অর্থাৎ কালিহাতি, ঘাটাইল ও মধুপুর উপজেলায় দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী পরিবারের সদস্যদের ৭৮টি ভর্তিযোগ্য রোগের বিনামূল্যে আন্ত:রোগী সেবা প্রদান করা হচ্ছে। উক্ত জেলার অবশিষ্ট নয়টি উপজেলায় পাইলটিং সম্প্রসারণ করার কার্যক্রম সম্প্রসারণ শুরু করা হয়েছে। এসএসকে পাইলটিং সফল হলে পর্যায়ক্রমে সারা দেশে এই কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এসএসকে’র অধীনে ওই এলাকার দরিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী পরিবারের সদস্যদেরকে বিনামূল্যে আন্ত:বিভাগে ভর্তিকৃত রোগী সেবা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অচিরেই সীমিত সংখ্যায় রোগীদের বহি:বিভাগীয় সেবা প্রদান করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘এই পাইলট প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় “হেলথ ইকোনমিকস” ইউনিটের আওতায় পরিচালিত পরীক্ষামূলক স্বাস্থ্যবিমা কার্যক্রমের সুপারিশের ভিত্তিতে পরবর্তীতে সমগ্র দেশে স্বাস্থ্যবিমা চালু করার মাধ্যমে ওষুধ ও চিকিৎসা দেওয়ার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।’

সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘সারা দেশে মুক্তিযুদ্ধকালীন বধ্যভূমি ও গণকবর চিহ্নিতকরণের লক্ষ্যে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও পরবর্তী সময়ে পরলোকগত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ২০ হাজার সমাধিস্থল সংরক্ষণ করা হবে। ১৯৭১ সালের নয় মাসব্যাপী স্বাধীনতা যুদ্ধে সারা দেশে ৩০ লাখ গণশহীদদের চিহ্নিত করা এখনো সম্ভব হয়নি। ভবিষ্যতে এ লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।’

গণফোরামের মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, এখন (এপ্রিল ২০১৯) দেশে মোবাইল গ্রাহক ১৬ কোটি পাঁচ লাখ। ২০০৮ সালে ছিল সাড়ে চার কোটি। বর্তমানে ইন্টারনেট গ্রাহক ৬০ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে নয় কোটি ৩৭ লাখ। বর্তমানে টেলিডেনসিটি ৯৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ ও ইন্টারনেট ডেনসিটি ৫৭ শতাংশ। ২০০৮ সালের ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ চার্জ প্রতি এমপিপিএস ২৭ হাজার থেকে কমে ২৮৫ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গত বছরের ১২ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরিত হয়েছে এবং গত ১৯ মে থেকে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে শুরু হয়েছে।’ জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশকে পেছনে ফেলে ২০১৮ সালে ১১৫ তম অবস্থানে পৌঁছেছে বলেও জানান তিনি।