আদালতে বিচারকও নিরাপদ নন: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে কী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হলে একজন বিচারক আদালতে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কবোধ করেন! দেশজুড়ে কেবল গুম, খুন, ধর্ষণ, হামলা-মামলা, নারী-শিশুদের পাশবিক নির্যাতন, প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা, আগুনে পুড়িয়ে হত্যাসহ দেশ ভরে উঠেছে অনাচার-অবিচারের মহামারিতে। আর অবৈধ সরকার ব্যস্ত ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, কুমিল্লা আদালতে বিচারকের খাস কামরায় কী ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেটা লক্ষ্য করেছেন। আদালতের বিচারক, কর্মকর্তা, পুলিশ, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের সামনে এক আসামি আরেক আসামিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক ফাতেমা ফেরদৌস সাংবাদিকদের বলেছেন, এ হত্যাকাণ্ডের শিকার আমিও হতাম, কিংবা আমার কোনো সহযোগী বা আইনজীবীও হতে পারতেন। আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?

তিনি বলেন, সরকারের নিষ্ঠুরতার কোপানলে পড়ে খালেদা জিয়া এখন কারাগারে, তিনি গুরুতর অসুস্থ। তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আগামী ১৮ জুলাই বরিশাল, ২০ জুলাই চট্টগ্রাম ও ২৫ জুলাই খুলনায় মহাসমাবেশ কর্মসূচি সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের নামে অতীতের মতো কোনো বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না। তার উদ্দেশে বলতে চাই, আপনি যে বিশৃঙ্খলার কথা বলছেন, সেটিই তো উস্কানিমূলক, অশুভ উদ্দেশ্য নিয়েই এ ধরনের বক্তব্য রাখছেন।

শেয়ারবাজার দৈন্য-দশাগ্রস্ত দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকা মানে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, লুটপাটের মহোৎসব। আওয়ামী সরকার আর শেয়ারবাজার একসঙ্গে চলতে পারে না। ১৯৯৬ সালের পর ২০১০ সালে শেয়ারবাজার থেকে এক লাখ কোটি টাকার বাজার মূলধন লুট হয়। এ টাকা ইউরোপ, আমেরিকা, মালেশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয়েছে।

রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীন দলের রথী-মহারথীরা এ লুটপাটের নায়ক। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সাত বছর পরও লুটেরাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি সরকার। উল্টো শেয়ারবাজার লুটপাটের সঙ্গে জড়িতদের বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করা হয়েছে। শেয়ার কেলেঙ্কারি মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে প্রধান সারিতে রয়েছেন দেশের তিনটি বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান। তারা শাস্তির বদলে আরও প্রতাপশালী হয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুকোমল বড়ুয়া, কবির মুরাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুনীর হোসেন, মৎস্যজীবী দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মাহতাব, তাঁতী দলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।