রাজনৈতিক দলগুলোকে ‘জাতীয় সংলাপের’ তাগিদ ড. কামালের

সারা দেশের বানভাসি মানুষদের বাঁচাতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐকফ্রন্টের আহ্বায় ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘বন্যা কেন ও কিভাবে হয়, বন্যা থেকে বাঁচার জন্য কী কী করণীয় সেগুলো নিয়ে জনগণকে আরও সচেতন করতে ও যথাযথ পদক্ষেপ-পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অবশ্যই একটা জাতীয় সংলাপ অপরিহার্য।’

সোমবার (২২ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে তফাজ্জল হো‌সেন মা‌নিক মিয়া হ‌লে গণ‌ফোরা‌ম আ‌য়ো‌জিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

ড. কামাল বলেন, ‘দেশে কার্যকর গণতন্ত্র নেই। দলমত নির্বিশেষে জনগণকে বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাই, বন্যার বিস্তৃতি ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনে সঠিক তথ্য তুলে ধরুন। বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তলুন।’

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে কাজগুলো হয় নাই সেগুলো চিহ্নিত করে আমাদের এগুতে হবে। সে কাজগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে। সরকারের পক্ষে একা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব নয়। সবাই মিলে সমন্বিতভাবে বন্যা মোকাবিলা করতে হবে।’

দেশে কার্যকর গণতন্ত্র না থাকায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ সফল হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন ড. কামাল।

দেশের এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও আইনজ্ঞ বলেন, ‘এ রকম বন্যা পরিস্থিতির সময় আমরা মনে করি সবাইকে নিয়ে বসা দরকার। এলাকার লোক, দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে মতবিনিময় করা হোক। সবার কাছে তথ্য যা আছে সবকিছু নিয়ে সেগুলোর মূল্যায়ন করা অপরিহার্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘অন্তত এই একবিংশ শতাব্দিতে দাঁড়িয়ে আমরা যেন গর্ব করে বলতে পারি- স্বাধীনতার একটা অর্জন সফল হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বন্যা মোকাবিলায় শতভাগ প্রস্তুত। অন্তত এই কাজটুকু আমরা করি। বন্যা নিয়ন্ত্রণে কী কী কাজ হচ্ছে সেটা জরিপ করা, এলাকায় গিয়ে দেখা উচিৎ কাগজে কলমে যা বলা হচ্ছে আসলে তা হচ্ছে কিনা।’

ড. কামাল বলেন, ‘নদীতে ড্রেজিং হলে তো এরকম ভরাট হওয়ার কথা না। এ ব্যপারে যে ভয়াবহতা, এতে সত্যি ভয় পাওয়ার কথা। কেননা বন্যা তো আমরা নতুন দেখছি না, এটার শিকার তো আমাদের পূর্বপুরুষ, পাকিস্তান আমল বা বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই দেখে আসছি। স্বাধীনতার পর আমরা চিহ্নিত করেছি যে এটা আমাদের একটা সমস্যা। এখন এই সমস্যা সমাধান না করে যদি একে অন্যকে দোষারোপ করা হয় তাহলে সমস্যা থেকেই যাবে। সবাই মিলে এর মোকাবিলা করতে হবে। সরকারের একার পক্ষে সম্ভব না।’

এসময় সারা দেশে বন্যাদুর্গতদের রিলিফ দেয়ার নামে সরকার প্রহসন করছে বলে মন্তব্য করেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাঈদ।

সংবাদ সম্মেলনে আবু সাঈদ কুড়িগ্রামের চিলমারী-রাজীবপুর ও রৌমারি এলাকাসহ অধিকতর বন্যা আক্রান্ত উপজেলাগুলোকে ‘দুর্গত এলাকা’ ঘোষণা করার দাবি জানান।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, গণফোরাম নেতা সুব্রুত চৌধুরী, জগলুল হায়দায় আফ্রিক, মোহাম্মদ আজাদ হোসেন ও লতিফুল বারি হামীম প্রমুখ।