লন্ডনে ৪ কোম্পানির মালিকানার খবরে যা বললেন সিদ্দিকী নাজমুল

ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। সাবেক এ ছাত্রনেতা বর্তমানে লন্ডনে অন্তত ৪ টি কোম্পানির মালিক বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ পেয়েছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নাজমুল আলমের প্রতিটি কোম্পানীর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তবে এ খবরে চটেছেন নাজমুল। তিনি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

নাজমুল আলমের দাবি তার কোম্পানী সম্পর্কে যেসব তথ্য দেয়া হয়েছে তার পুরোটাই ভুয়া। তিনি সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে সাবধানে সংবাদ করতে পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে মামলা করবেন না বলেও জানান।

সিদ্দিকী নাজমুল আলমের ফেসবুক পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

‌’তামাশা?

লন্ডনে একটা কোম্পানি খুলতে খরচ হয় ১২ পাউন্ড। চারটি কোম্পানি খুলতে খরচ হয়েছে ৪৮ পাউন্ড। বাংলা টাকায় প্রায় চার হাজার ৯০০ টাকা, যা সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স খোলার চাইতেও কম। আর অপরিশোধিত মূলধন হিসেবে চাইলে আপনি যা ইচ্ছা দেখাতে পারবেন। তারপরও আমার কোনো কোম্পানির অপরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ পাঁচ থেকে সাত হাজার পাউন্ডের বেশি নয়। অথচ কী কাল্পনিক নিউজ? আর কোম্পানি যুক্তরাজ্যে চাইলে যে কেউ খুলতে পারে। জাস্ট ২০ মিনিট সময় লাগে অনলাইনে।

আমার কোম্পানিগুলোর নাম তো সবাই পেলেন। এখন Companyhouse.gov.uk এখানে গিয়ে দেখলেই বুঝবেন, সংবাদের সত্যতা কতটুকু। আরেকটা কথা, যুক্তরাজ্যে চাইলেই কেউ কোটি কোটি পাউন্ড ইনভেস্ট করতে পারে না। আর যে কোম্পানির কথা বলছেন, ১০ কোটি টাকার, সেটা এখন ওই সাংবাদিকের কাছে বিক্রি করতে চাই বিনামূল্যে। যদি কোনো মায়ের বুকের দুধ খেয়ে থাকেন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন। আমি বললাম তো, ওই কোম্পানিতে এক টাকাও বিনয়োগ করা হয়নি, শুধু নাম দিয়ে কোম্পানি খুলে রেখেছি।

মামলা করলে এ দেশে কী পরিনতি হয় তা তো জানেন পণ্ডিত সাহেব? দিলাম না আপনার পেটে লাথি। কারণ হয়তোবা অ্যাস্যাইলাম মেরে থাকতেছেন, এই দেশে হাজার মাইল দূরে রেখে আসা পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে। আমি চাইলেই পণ্ডিত মহাশয়কে আইনের মাধ্যমে শায়েস্তা করতে পারি। আবারও মাফ করে দিলাম, কারণ অভ্যাস হয়ে গেছে।

লায়ার!

লল!’

স্ট্যাটাসের শেষ দিকে নাজমুল আলম তার কোম্পানীগুলো সম্পর্কে তথ্য যাচাই করতে একটি লিংকও যুক্ত করে দিয়েছেন। বলেছেন, যে কেউ ইচ্ছা করলে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পারে।

সিদ্দিকী নাজমুল আলমে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান নিয়ে করা ওই প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ব্রিটিশ সরকারের কাছে নাজমুলের কোটি কোটি টাকার নিবন্ধিত বিনিয়োগ রয়েছে। তার নামে ব্রিটেনের কোম্পানি হাউজে আবাসন, গাড়ির অ্যাক্সিডেন্ট ক্লেইম ম্যানেজমেন্ট, পণ্যের পাইকারি বিক্রেতা, বিজ্ঞাপন, চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান, সেবা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধরনের ছয়টি কোম্পানির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুটি কোম্পানির পরিচালক পদে তার নাম নেই। বাকি চারটি কোম্পানির মধ্যে একটির একক পরিচালক এবং আরও তিনটি যৌথ পরিচালক হিসেবে তিনি রয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বর্তমানে সিদ্দিকী নাজমুল আলম বিনিয়োগকারী ভিসায় যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। ব্রিটিশ সরকারের আইন অনুযায়ী, এই ভিসা পেতে ন্যূনতম দুই লাখ পাউন্ড (বাংলাদেশি টাকায় দুই কোটির বেশি) বিনিয়োগ করতে হয়। ব্রিটেনে নাজমুলের বিলাসবহুল জীবন ও আর্থিক উৎসের নানা কাহিনী নিয়ে খোদ যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যেই এখন কানাঘুষা চলছে।