রেমিট্যান্স বাড়ানোই প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনার মূল লক্ষ্য : অর্থমন্ত্রী

রেমিট্যান্স প্রেরণকারীরা সরাসরি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছেন বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, ‘বৈধ পথে প্রবাসীরা যত খুশি রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেন। এই রেমিট্যান্সের পরিমাণ প্রতি ট্রানজেকশনে এক হাজার ৫০০ ডলারের বেশি না হলে যুক্তরাজ্যে বা বাংলাদেশে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলবে না। বরং প্রেরিত রেমিট্যান্সের ওপর ২% হারে প্রণোদনা রেমিট্যান্স প্রেরণকারীকে দেওয়া হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এ জন্য ইতিমধ্যে সরকার তিন হাজার ৬০ কোটি টাকার অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে। তাই প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান আপনারা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠান। বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়ানোই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২% প্রণোদনার মূল লক্ষ্য।’

লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনে গত বৃহস্পতিবার আয়োজিত ‘ইনসেনটিভাইজিং রেমিট্যান্স ফরম দ্য ইউকে : মাইলটোন ইনিসেটিভস অব প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে ২০টিরও বেশি রেমিট্যান্স পাঠানো প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে মত বিনিময় করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রেমিট্যান্সের ওপর এ প্রণোদনা জুলাই ২০১৯ থেকে কার্যকর হয়েছে। কাজেই যারা ওই সময় থেকে বাংলাদেশে বৈধ পথে টাকা পাঠিয়েছেন, তারা রেমিট্যান্স প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের প্রাপ্য প্রণোদনা গ্রহণের ব্যবস্থা নিতে পারেন। প্রবাসীদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২% প্রণোদনা একটি নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। বিশ্বের আর কোনো দেশের প্রবাসীরা এ সুবিধা পাচ্ছেন না। রেমিট্যান্স প্রেরণের ক্ষেত্রে প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধাগুলি সার্বক্ষণিক নজরদারীর জন্য যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনারের নেতৃত্বে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠন করা হবে।’

প্রবাসীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রবাসীদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। বিভিন্ন বন্ডের মাধ্যমে প্রবাসীদের বিনিয়োগে সুযোগ রযেছে। আগামী মাসে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে বাংলা টাকা বন্ড চালু করা হচ্ছে। যা প্রবাসীদের বিনিয়োগের একটি বড় ধরনের সুযোগ সৃষ্টি করবে। বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রায় ১৩০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। এরমধ্যে ৪০টি অঞ্চলের কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রবাসীরা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি লাভবান হতে পারেন। বাংলাদেশে সরাসরি বিনিয়োগ বা এফডিআই ও বিদেশি সহায়তা বাড়ছে। গত বছরের হিসাবে আমাদের এফডিআই ৪০ শতাংশ বেড়েছে। শতকরা হিসাবে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। অর্থাৎ বিনিয়োগ আকর্ষণে এগিয়েছে বাংলাদেশ।’

আলোচনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম ঘোষণা করেন, ‘২০২০ সাল থেকে প্রতি বছর যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে সর্বাধিক রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হবে।’

হাইকমিশনার বলেন, ‘যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ প্রতি বছরই বাড়ছে। বৈধ পথে রেমিটেন্স আরও বাড়ানোর জন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাস আয়ের ওপর ২% প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আশা করা যায় প্রণোদনা দেওয়ার ফলে রেমিট্যান্সের পরিমাণ আগামী বছর রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে।’