ঢাকা মহানগর আ’লীগের উত্তর-দক্ষিণে আলোচনায় যারা

আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নতুন নেতৃত্বে কারা আসছেন, তা নিয়ে শুরু চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। দুই শাখাতেই বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ পদে যারা রয়েছেন, তারা বাদ পড়বেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

এদিকে, ‘যেকোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত কেউই নতুন কমিটিতে থাকতে পারবেন না’- এমন সিদ্ধান্তে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আগামী ৩০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন একইসঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে। ২০ ও ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে যেসব কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ সেসব জায়গায় সম্মেলনের অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মার্চে অনুষ্ঠিত দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় ঘোষণা দিয়েছিলেন, এবারের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সংগঠনকে ঢেলে সাজানো হবে।

এছাড়া গত সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া শুদ্ধি অভিযানে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি সাংগঠনিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের কয়েকজনকে গ্রেফতার এবং কয়েকজনকে সংগঠনের দায়িত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পদক পদসহ গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্বে থাকা নেতারাও বাদ পড়তে পারেন। আগামী সম্মেলনে ওইসব পদে নতুনদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। তবে কারা দায়িত্বে আসছেন সেই বিষয়ে কেউই কিছু বলতে পারছেন না। এক্ষেত্রে সংগঠনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক সম্পৃক্ত, জনপ্রিয় এবং অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন নেতাদেরকেই দায়িত্বে আনা হবে। বিষয়টি একান্তই নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর। যেকোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত কেউই কমিটিতে থাকতে পারবেন না। এ ব্যাপারে তিনি কঠোর অবস্থানে রয়েছেন।

এদিকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকজন নেতার নাম আলোচনায় এসেছে।

উত্তরের সভাপতি পদে যাদের নাম আলোচনায় রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম শেখ বজলুর রহমান। তিনি বর্তমানে উত্তরের সহসভাপতির দায়িত্বে আছেন। এর আগে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগেরও তিনি সহসভাপতি ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন কাদের খান, এসএ মান্নান কচি, বর্তমান কমিটির উপ-দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক রানা প্রমুখ।

দক্ষিণের সভাপতি পদে আইনজীবী নেতা নজিবুল্লাহ হিরুর নাম আলোচনায় রয়েছে। আবার বর্তমান সভাপতি হাজী আবুল হাসনাতও থেকে যেতে পারেন এমন আলোচনাও আছে। এছাড়া অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, বর্তমান সহসভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফির নামও শোনা যাচ্ছে।

সাধারণ সম্পাদক পদে জোর আলোচনায় আছে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রয়াত এমএ আজিজের ছেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর বিন আজিজ (তামিম)। বর্তমানে তিনি দক্ষিণের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক।

এছাড়া বর্তমান প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আখতার হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার রায়, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী আবু সাঈদের নামও আলোচনায় রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, পরিবর্তন আসবে কি না, কমিটিতে কারা আসবেন সেটা এখনই বলা কঠিন। কমিটি দেবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। তবে যারা সংগঠনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক সম্পৃক্ত, যে এলাকায় তিনি দায়িত্ব পালন করবেন সেখানে তার জনপ্রিয়তা এবং কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত আছে কি না, এসব দেখেই নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করা হবে।