বাস্তবসম্মত হয়নি সড়ক পরিবহন আইন : মির্জা ফখরুল

সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবসম্মত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার সকাল ১০টায় ঠাকুরগাঁও শহরের তাঁতীপাড়ায় পৈতৃক নিবাসে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইনটি বাস্তবসম্মত হয়নি। এটি শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট স্টক হোল্ডারদের নিয়ে আলোচনায় বসে এই আইন প্রণয়ন করা উচিত ছিল।’

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এই সরকার রাষ্ট্রপরিচালনায় ব্যর্থ তাই দেশে এ সময়ে পেঁয়াজ-লবণ সংকট দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ আজ ব্যর্থ রাষ্ট্রে রূপ নিয়েছে। আইনের সুশাসন নেই। দুঃশাসনের যাতাকলে সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় গণঅভ্যুত্থান।’

ফখরুল বলেন, ‘আইনের সুশাসনের অভাবে প্রশাসনও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে না। দুর্নীতিতে দেশ ডুবে গেছে। দলীয় কর্মীদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভিসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অঙ্গনে অস্থিরতা বিরাজ করছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নৈরাজ্য ও অপশাসন এবং ভিসির অপতৎপরতা বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনের নেতারা প্রতিবাদ করায় তাদেরও বের করে দেওয়া হয়েছে। কারণ ভিসির নাকি রাজকীয় পরিবারের সঙ্গে মিল মহব্বত রয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘৫২ থেকে ৯০-র গণঅভ্যুত্থানসহ দেশে সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্র সমাজের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি।’

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ছাত্র সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি ।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের চলমান সমস্যার দিকে সরকারের মনোযোগ নেই। বড় বড় মেগা প্রজেক্ট তৈরি করে কীভাবে জনগণের টাকা লুট করা যায় এ নিয়ে তারা ব্যস্ত। কোটি কোটি টাকা লুট করে তারা বিদেশে পাচার করছে।’এসবের প্রতিবাদে দাঁড়ালেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে তা পণ্ড করে দিচ্ছে এমন অভিযোগ করেন তিনি।

মহাসচিব বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। এ দেশের স্বাধীকার আন্দোলনে ভারতের অবদান রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ সরকার তিস্তাসহ দেশের নদীগুলোর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে।’

মিয়ানমার সম্পর্কে ফখরুল বলেন, ‘দুই বছরেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সমস্যা নিরসন করতে পারেনি আওয়ামী লীগ সরকার। কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে ফ্যাসিস্ট এ সরকার।’

বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারের হীনমন্যতা আর দৈন্যতার কারণে তাকে অন্যায়ভাবে আটক রাখা হয়েছে। গণআন্দোলনের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসনকে মুক্ত করা হবে’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল নয়। বন্যায় যেমন পদ্মা-যমুনা-মেঘনার দুই তীর ভাঙে, কিন্তু নদীর প্রবাহ ঠিক থাকে। বিএনপির এ রূপ গতি রয়েছে। সরকার বিএনপির পেছনে টিকটিকি লাগিয়ে দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে মাত্র।’

এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার দাদা বাড়ি পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলায় রওনা হন। সেখান থেকে তিনি তেঁতুলিয়া যাবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।