‘কী কারণে খালেদা জিয়ার জামিন হয়নি, পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত’

কী কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ হয়েছে তা পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার জয়নুল আবেদীন।

আজ বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার আবেদনের ওপর আদেশ দেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের অডিটরিয়ামে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘এখন আদালত যে আদেশ দিয়েছেন সেখানে কোনো রিজন (কারণ) উল্লেখ করা হয়নি। দেখবো, কী কারণে আমাদের আবেদন খারিজ করা হয়েছে। সে বিষয় দেখে আমাদের একটা সিনিয়র আইনজীবী প্যানেল আছে, ওই প্যানেলের আইনজীবীরা বসে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পূর্বেই আমরা জানতে পেরেছিলাম, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে এতই অসুস্থ যে তিনি দিন দিন পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন। আমরা রিপোর্ট কালেক্ট করার চেষ্টা করলাম। আমি নিজেই বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হসপিটালের ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম। এবং বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য আইজির কাছে আমরা আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আইজি আমাদের সেই আবেদনের কোনো জবাব দেননি।’

‘তবে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের ভিসি আমাকে জানালেন, কোর্টের আদেশ ব্যতীত তিনি আমাকে এই রিপোর্ট দিতে পারছেন না। পরে গত ২৮ তারিখ আমরা বিষয়টি যখন আদালতের দৃষ্টিতে আনলাম তখন আদালত রিপোর্ট কল করলেন। এই মামলার হিয়ারিং-এর জন্য গত ৫ তারিখ দিন ধার্য করেন আদালত।’

এই আইনজীবী বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, ৫ তারিখে রিপোর্ট আসবে। সেই রিপোর্ট দেখে মাননীয় আদালত আবেদন গ্রহণ করবেন। কিন্তু ওইদিন অ্যাটর্নি জেনারেল আবার সময় প্রার্থনা করলেন। যাই হোক, আমরা কয়েকদিন পর্যন্ত সরকারের প্রস্তুতি দেখছিলাম। সেই প্রস্তুতি হিসেবে আপনারা দেখেছেন আনপ্রেজেন্টেট একটা অবস্থা। যা আমরা অতীতে কখনোই দেখি নাই।’

বিএনপির এই আইনজীবী বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম যে আদালত আমাদের কথা শুনবেন। আমরা মানবিক কারণে তার বেইল চাই। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত থেকেও তিনি বেইল পেলেন না।’

চিকিৎসার পরবর্তী ধাপের জন্য খালেদা জিয়া সম্মতি দিচ্ছেন এ প্রসঙ্গে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘মোটেও সত্য কথা নয়। আমি যদি অসুস্থ লোক হই তাহলে তো আমি বাঁচতে চাইবোই। সেখানে কেউ কি নিজে নিজেই মরতে চায়? যেখানে খালেদা জিয়া প্রোপার ট্রিটমেন্ট হচ্ছে না, সেখানে অ্যাডভান্স চিকিৎসার কথা বলা হচ্ছে কেন? তার অর্থ নেই, এখানে প্রোপার ট্রিটমেন্ট নাই।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৯ অক্টোবর ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আখতারুজ্জামান খালেদা জিয়াকে এ মামলায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন। মামলার বাকি সব আসামিকেও একই সাজা দেওয়া হয় এবং ট্রাস্টের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের ঘোষণা করেন আদালত। সাত বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত এ মামলায় হাইকোর্টে জামিন না পেয়ে গত ১৪ নভেম্বর আপিল বিভাগে আবেদন করে জামিন চান খালেদা জিয়া।

গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ড দেওয়ার পর আদালত খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠান। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।