রাজনীতিতে শেখ হাসিনার উচ্চতায় কেউ পৌঁছতে পারবে না: আব্দুর রহমান

বিএনপি জামাত যতোই ষড়যন্ত্র করুক না কেন শেখ হাসিনা বিশ্বসভার রাজনীতিতে যে উচ্চতায় পৌঁছেছেন, তাকে স্পর্স করার মতো কোনো রাজনৈতিক শক্তির উত্থান বাংলাদেশে হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

ক্ষমতার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কখনো আপোস করেননি উল্লেখ করে আব্দুর রহমান বলেন, ২০০১ সালে আমেরিকা  গ্যাস চেয়েছিল। শেখ হাসিনা বলেছিলেন- দেশে ৫০ বছরের গ্যাস মজুদ থাকলে তখনই কেবল রফতানির চিন্তা করা হবে। তার আগে গ্যাসের পাইপ দিয়ে আমাদের রক্ত যাবে তবু গ্যাস যাবে না।

এ সময় মেহনতি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, সুবিধালোভীরা যেন আওয়ামী লীগের সুসময়ে অনুপ্রবেশ করতে না পারে এ ব্যাপারে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। যারা তিলে তিলে সংগঠনকে গড়ে তুলেছে তাদের ফাঁকি দিয়ে স্বাধীনতা বিরোধীরা যেন সংগঠনে থাকতে না পারে।

১৯৭৪ সালে দেশে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, তখন দেশের মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু সাহায্য চেয়েছিলেন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন- সাহায্য করতে পারি, বিনিময়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে আমাকে সামরিক বাহিনীর ঘাঁটি করতে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হওয়া দেশের এককণা মাটি দিয়েও কারো সঙ্গে আপোস করেননি। এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুকে খন্দকার মোস্তাকরাই খুন করেছিল বলে উল্লেখ করেন।

আব্দুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনী এবং যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে বেগম খালেদা জিয়া পতাকা উঠিয়ে দিয়েছিলেন।সেই পতাকা নামিয়ে ওদের (যুদ্ধাপরাধী) ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়েছে আমার নেত্রী বন্ধবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের কালো রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ তার পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করেছিল খুনীরা।আমার নেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।

আব্দুর রহমান বলেন, সেদিন ঘাতকরা দম্ভোক্তি করে বলেছিল এই দেশে আর কোনো দিন শেখ মুজিবের নাম এবং জয় বাংলা শ্লোগান উচ্চারিত হবেনা।যারা বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছে তাদের বিচার এই বাংলার মাটিতে হবে না।কিন্তু সাতক্ষীরা এসে দেখলাম জয় বাংলা শ্লোগান আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়ায়।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ১৫ আগস্টের পর যখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী পথহারা পথিকের মতো এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছিল।তখন আমিসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীকে তৎকালীন মোস্তাক সরকার গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘদিন বিদেশের মাটিতে কাটিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা স্বদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন।তখন দেশের দক্ষিণ পশ্চিামঞ্চল সহ সারা দেশের হাজার হাজার মানুষ বিমান বন্দরে জড়ো হয়েছিল।

আব্দুর রহমান বলেন, আমাদের নেত্রী স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৯ বার মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন।

তিনি বলেন, শেরে বাংলা নগরে লাখো জনতার সামনে জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন আমার অবস্থা যদি আমার বাবা শেখ মুজিবের মতোও হয়, তারপরও এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটাবোই ফুটাবো।সেই লক্ষ্য নিয়েই তিনি দেশের মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, হারিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগকে তিনি চার বার ক্ষমতায় এনছেন।৬৮ হাজার অন্ধকার গ্রামকে তিনি আলোয় আলোকিত করেছেন।তিনি হতদরিদ্র মানুষের মুখে খাবার তুলে দিয়েছেন।তিনি গরিব মানুষের জন্য মোটা কাপড়, বাসস্থান ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, শিক্ষার্থীদের বছরের শুরুতে বই ও বৃত্তি, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভাতা সহ সামাজিক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছেন।বিশ্বকে তাক লাগিয়ে উন্নয়নের ধারা বাংলার জনগণকে উপহার দিয়েছেন।তাই বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বিশেষ অতিথি হিসেবে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, সর্বশেষ সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি।