নিজেদের পকেট ভারী করতে ইভিএমের ব্যবহার : রিজভী

ক্ষমতাসীন দলের পকেট ভারী করতেই ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘ইভিএম ব্যবহার করার কারণে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকার অপচয় হচ্ছে। ’

আজ রোবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ব্যালটের পরিবর্তে ইভিএমে নির্বাচনের আয়োজন করায় নির্বাচনী ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। মূলত ক্ষমতাসীনদের পক্ষে ডিজিটাল ভোট ডাকাতি করা এবং নিজেদের পকেট ভারী করতে জনগণের টাকা লুটপাটের জন্যই ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে।’

‘সংশ্লিষ্ট সকলের আপত্তি সত্ত্বেও ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে নির্বাচন কমিশনের তোড়জোড় বেপরোয়া দুর্বৃত্তপনারই বর্ধিত প্রকাশ। আমরা আবারও আহ্বান জানাচ্ছি ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচনের পথ থেকে সরে আসুন। অন্যথায় পদত্যাগ করুন। তা না-হলে আপনাদের মাস্টারপ্ল্যান নির্বাচনের বিরুদ্ধে জনগণ সমুচিত জবাব দেবে।’

ইভিএম ব্যবহার করায় রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকার অপচয় হচ্ছে জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘ইভিএম ব্যবহার করা বিগত কয়েকটি নির্বাচন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ব্যালট পেপারের পরিবর্তে ইভিএম ব্যবহার করার কারণে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকার অপচয় হয়েছে। ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে প্রশিক্ষণ খাতেই বাজেট রাখা হয়েছে ২৩ কোটি ৯০ লাখ ৯২ হাজার টাকা। প্রশিক্ষণের বাইরে নির্বাচন পরিচালনা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা খাতে কমবেশি ৪৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।’

‘অথচ ২০১৫ সালে সর্বশেষ ঢাকার দুই সিটিতে ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচনে ইসির খরচ হয়েছিল মাত্র ২৮ কোটি টাকা। শুধু ইভিএমের কারণেই সাড়ে চার বছরের ব্যবধানে সেই খরচ গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৯ কোটি টাকায়। ব্যালটের চেয়ে ইভিএমে ভোট গ্রহণে প্রশিক্ষণ খাতেই অন্তত আটগুণ বেশি খরচ দেখানো হচ্ছে’, যোগ করেন রিজভী।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, এনআইডির সাবেক ডিজি বর্তমানে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং এনআইডির বর্তমান ডিজির পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় রাষ্ট্রের হাজার কোটি টাকা লুটপাট করতে জনগণের ঘাড়ে ইভিএম চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।

তিনি বলেন, ‘ইভিএম এখন ইসির কাছে মধু। অর্থ লুটপাটের বিনিময়ে তারা সরকারকে ডিজিটাল কারচুপির মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি উপহার দেবেন। একারণে সব মতামতকে থোড়াই কেয়ার করে এই নুরুল হুদার কমিশন ইভিএমে ভোট করতে চান।’’

রিজভী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বারবার বলছে, গোপন কক্ষে থাকবে ব্যালট ইউনিট। সেখানে ভোটার ছাড়া কারোর যাওয়ার সুযোগ নেই। এটা সম্পূর্ণ ডাহা মিথ্যা তথ্য। এখন অধিকাংশ ভোট কক্ষের নিয়ন্ত্রণ থাকে ক্ষমতাসীন দলের হাতে।’