সায়েম খন্দকার তাঁর কর্মে ও আদর্শে বেঁচে থাকবে

গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যাত্রাবাড়ী ৫০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি করোনা যোদ্ধা সায়েম খন্দকার মারা গেছেন।

গত রবিবার (১৭ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সায়েম খন্দকারের বাসা যাত্রাবাড়ি টানপাড়া সামাদ সুপার মার্কেটের পাশে। তার দু’জন মেয়ে আছে। প্রায় ২০ দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। স্কয়ার হাসপাতালে করোনা ভাইরাস টেস্ট করে পজিটিভ আসে। এরপর ৮/১০ দিন ধরে ঢামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। রবিবার সকালে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে জানান চিকিৎসকরা। তিনি মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তান রেখে গেছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্র নায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো: মাইনুল হোসেন খান নিখিলের উদ্যোগে এলাকায় অসহায় মানুষদের ত্রাণ দিতে গিয়ে সায়েম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই বহু অসহায় মানুষকে ত্রাণ দিয়েছেন। অসহায় মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ছুটে গিয়ে সহযোগিতা করেছেন। কখনো বসে থাকেননি। তিনি করোনা ভাইরাসে মৃত ব্যক্তিদের জানাজা দেওয়ার জন্যও আলাদা জায়গা তৈরি করেছিলেন। কিন্ত সায়েম খন্দকার সবাইকে ছেড়ে করোনা যুদ্ধে হেরে গেলেন৷ তার অপ্রত্যাশিত চলে যাওয়া আমাদের জন্য সত্যি খুব কষ্টের। কখনোই ভাবিনি সায়েম খন্দকার এইভাবে চলে যাবে। তার আত্মত্যাগ আজীবন যুবলীগ পরিবার মনে রাখবে। সায়েম খন্দকার মারা গেলেও তার কর্ম, আদর্শ মানুষের মাঝে বেঁচে থাকবে।

এদিকে সংগঠনের নেতার মৃত্যুতে কেন্দ্রীয় যুবলীগ ও ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে। যুবলীগ নেতা সায়েম খন্দকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরীক্ষিত সৈনিক ছিলেন। আমরা একজন একনিষ্ঠ কর্মীকে হারালাম। আমরা তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।

সায়েম খন্দকার যুবলীগের জন্য একজন নিবেদিত নেতা ছিলেন। তিনি যুবলীগের সকল প্রোগ্রামে হাজার হাজার কর্মী নিয়ে সবার আগে হাজির হতেন। যাত্রাবাড়ী ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে জামায়াত বিএনপির সক্রিয় অবস্থা ছিল। কিন্তু সায়েম খন্দকার যুবলীগের সভাপতি হওয়ার পর ঐ এলাকায় যুবলীগের সাংগঠনিক অবস্থা খুবই শক্তিশালী হয়। তবে তার মৃত্যুতে ওই এলাকায় এখন দলের সাংগঠনিক অবস্থা কিছুটা হলেও দুর্বল হয়ে পড়বে।

সায়েক খন্দকার পরিবারের চেয়ে দলকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছে। যেকোন মানুষের পাশে দাড়িয়েছে। এই করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দিনরাত কাজ করেছেন। অসহায়, দরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। জীবনের মায়া ত্যাগ করে আত্মমানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছে। অথচ বিনিময়ে মহামারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জীবন যুদ্ধে হেরে গেলেন। দিয়ে গেলেন নিজের তাজা প্রাণ। প্লীজ ভাই আমাদের ক্ষমা করবে। যুবলীগের একজন কর্মী হিসেবে আজীবন ঋণী হয়ে গেলাম।

তবে সায়েম খন্দকার যুবলীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীর মধ্যে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে বেঁচে থাকবে। কারণ তিনি এদেশের মানুষ ও দেশকে করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত করার জন্য কাজ করেছে। সার্বিকভাবে মানুষের এই দুর্দিনে পাশে দাড়িয়ে ছিলেন।

লেখক
গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু
সাংগঠনিক সম্পাদক
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ
সাবেক ভিপি
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ