শেখ হাসিনা মানুষকে গরু-ছাগলের মতো খোঁয়াড়বন্দি করেছেন: রিজভী

মধ্যরাতের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটাকে খোঁয়াড়ে পরিণত করে দেশের জনগণকে গরু-ছাগলের মতো সেই খোঁয়াড়ে বন্দি করে দুঃশাসন বলবৎ রেখেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, ‘এদেশের মানুষ গরু-ছাগল না, তারা মানুষ। মানুষ চিন্তা করে, মানুষ স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে চায়। সেই চিন্তার কথাগুলো বলতে চায়, লিখতে চায়। কিন্তু শেখ হাসিনা সেটা হতে দেবেন না। তিনি দেশকে খোঁয়াড়ে পরিণত করে মানুষকে গরু-ছাগলের মতো সেই খোঁয়াড়ে বন্দি করে রেখেছেন। মানুষের বাক-বুদ্ধি-চিন্তার স্বাধীনতা হরণ করেছেন।’

এ প্রসঙ্গে রিজভী আহমেদ আরও বলেন, ‘কারণ তিনি (শেখ হাসিনা) মনে করেন, ঘর নামের এই খোঁয়াড়ে মানুষ বন্দি থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কথা বলতে পারবে না কেউ। তিনি বিনা বাধায় দিনের ভোট রাত্রে করতে পারবেন। এখন জনপ্রতিনিধি কে হবেন সেটিও আগেই ঠিক করে রাখা হয়। নির্বাচনের নামে নাম ঘোষণা হয় মাত্র। প্রকৃত ভোটাররা এখন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে না।’

বুধবার (২৯ জুলাই) সকালে মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর আড়িয়াল খাঁ বিলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল মুন্সিগঞ্জ উপজেলা শাখার উদ্যোগে জাতীয় মৎস সপ্তাহ ২০২০ উপলক্ষে উন্মুক্ত জলাশয়ে মৎস অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারের জুলুম-নির্যাতন সহ্য করে বিএনপি আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে উল্লেখ করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘বিএনপি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন করছে। এই গণতন্ত্র আজকে বর্তমান সরকার কেড়ে নিয়েছে। আজকে যদি আপনারা মতপ্রকাশের জন্য ফেসবুকে কিছু লেখেন, দিনে রাতে যেকোনও সময় সাদা পোশাকধারীরা আপনাকে তুলে নিয়ে যাবে। আজকে ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারও কেড়ে নেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে লড়াই করছি। এই লড়াই করতে গিয়ে শুধু আমি কিংবা আপনারাই কারাগারে যাইনি, দেশের কোটি কোটি মানুষের যিনি আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও সরকার অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় দুই বছরের অধিককাল কারাগারে বন্দি করে রেখেছিলো। সরকারের রোষানলে পড়ে আজকে দেশছাড়া হয়েছেন কোটি মানুষের নয়নের মণি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দেশ এবং দেশের মানুষের পক্ষে কথা বলেছেন বলেই তিনি আজ দেশছাড়া।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাজনীতি ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। গণতন্ত্র হত্যা করেছিলো আজকে যারা ক্ষমতায় আছে তাদেরই পূর্বপুরুষেরা। তারা সেই সময়ে এই কাজগুলো করেছিলেন। সংবাদপত্রগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল তারা, কয়েকটি পত্রিকা ছাড়া কোনও পত্রিকা চলতে দেয়নি। কথা বলা যাবে না। এক দল এক নেতা ছাড়া কথা বলা যাবে না। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে এগুলো চালু করে দিয়েছিলেন। বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, কথা বলার স্বাধীনতা, লেখার স্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।’

রুহুল কবীর রিজভী আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের আরও একটি কাজ ছিল উন্নয়ন এবং উৎপাদনের রাজনীতি। দু-একটা ফ্লাইওভার করে আওয়ামী লীগ নেতাদের মতো পকেট ভারি করে কানাডায় বাড়ি বাড়াবেন, সেকেন্ড হোম করবেন মালয়েশিয়ায়- এটা জিয়াউর রহমানের নীতি ছিল না।’

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, মৎসজীবী দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মাহতাব, সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, মৎস্যজীবী দল মুন্সিগঞ্জ জেলার সদস্য সচিব আলমগীর হোসেন সামি প্রমুখ।