ইসির নেতৃত্বে জাতির চরম সর্বনাশ হয়েছে: রিজভী

রাতের ভোট হওয়া নিয়ে ইসি প্রধানকে প্রশ্ন করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, রাতের ভোট নিয়ে আপনাদের প্রশ্ন করার সুযোগ নেই, তা বুঝলাম, তবে সেই সুযোগটা কার আছে সেটা তো আপনি জানেন। কারণ আপনাদেরকে কে ইন্সট্রাকশন দিয়েছেন রাতে ভোট করার জন্য সেটা তো আপনাদের অজানা থাকার কথা নয়।

তিনি আরো বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার স্বীকার করে নিলেন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতের ভোটের কথা। তার নেতৃত্বেই জাতির চরম সর্বনাশ করা হয়েছে। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দেশ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। গণতন্ত্রের সমাধি হয়েছে। সেটার সম্পূর্ণ দায় আপনার।

‌‌’দেশে‌ কখনও রাতের বেলা কোনো ভোট হয়নি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) কে এম নূরুল হুদার বক্তব্যের পতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।

নির্বাচন কমিশন তামাশার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, অগণতান্ত্রিক নাৎসীবাদী সরকারের প্রধান সঙ্গী আপনি। সরকারের সাথে লেজুড়বৃত্তি করে আপনারা (কে এম নুরুল হুদা গং) নির্বাচন কমিশনকে এখন এক হাস্যকর তামাশার প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। নির্বাচন কমিশন সরকারের ঢোল-তবলায় পরিণত হয়েছে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচন যে আসলে ২৯ তারিখ দিবাগত রাতেই হয়ে গিয়েছিল, সেটি এখন আর কারো কাছে গোপন নেই। দেশ-বিদেশে কোথাও সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। দেশ থেকে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে নির্বাচন কমিশন নামের ঠুঁটো জগন্নাথ প্রতিষ্ঠান এখন কুম্ভকর্ণের ঘুম দিয়েছে।

ভোটের পূর্বে বিরোধী দলের প্রার্থী সমর্থকদের গ্রেফতারের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, আপনি দিনের ভোটেও ভোটারদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে আসতে চতুস্পদ প্রাণীদের অধিকার দিয়েছেন। এই পরিস্থিতি নির্বাচন কমিশনের অসৎ অনাচারের সারাংশ মাত্র। এছাড়াও নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিরোধী দলের প্রার্থীদের বাদ দেয়া ও হয়রানী করাসহ ভোটারদেরকে ভয় দেখানো, মিথ্যা মামলা, গ্রেফতারের হিড়িক ইত্যাদি সরকারের সুষ্ঠু নির্বাচনবিনাশী কার্যক্রমের প্রধান সহায়তাকারি হিসেবে নির্বাচন নামক বিষয়টির অস্তিত্বই আপনি ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছেন।

করোনায় দেশে পরিস্থিতি নিয়ে রিজভী বলেন, গত দুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন-করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসছে, প্রস্তুতি নিন। এর পরদিন তথ্যমন্ত্রী একই কথা বলেছেন। গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন করোনা ভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ চলছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য টেনে রিজভী বলেন, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের সেকেন্ড ওয়েভ এখনো শুরু হয়নি। আবার তারা বলছেন, করোনার দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ যে আসবেই, ধরাবাঁধা এমন কোনো কিছু নেই। মানুষের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর নির্ভর করবে দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ বা সেকেন্ড ওয়েভ আসবে কি না।