সরকার কারচুপির চেষ্টায় লিপ্ত: সালাহ্ উদ্দিন আহম্মেদ

সরকার প্রথম থেকেই নির্বাচনে কারচুপির চেষ্টায় লিপ্ত ছিলো বলে অভিযোগ করেন ঢাকা-৫ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী সালাহ্ উদ্দিন আহম্মেদ। তিনি বলেন, নির্বাচনী বিভিন্ন এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছে। আমাদের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপনির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের পরিবেশ দেখতে এসে তিনি এ কথা বলেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘এই সরকার প্রথম থেকেই নির্বাচনে কারচুপির চেষ্টায় লিপ্ত ছিল, এখনো আছে। আজকের নির্বাচনেও তা-ই করেছেন তারা। সকাল থেকেই আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ঢাকা-৫ আসনের বিভিন্ন এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছে। আমাদের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই আসনের ১৪টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ কেন্দ্র থেকে আমাদের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার খবর পেয়েছি। অথচ এখানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা কোনো ভূমিকা রাখছেন না।’

‘যখনই কোনো অনিয়ম হয়েছে, আমাদের পক্ষ থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, প্রিসাইডিং অফিসার এবং প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্তদেরকে জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছেন।’

সালাহউদ্দিন আহম্মেদ আরও বলেন, ‘সাংবাদিক ভাইদের কাছে অনুরোধ থাকবে, আপনার জাতির বিবেক, আপনারা জনগণের চোখ। জনগণ আজ কী অবস্থায় আছে; তা আপনারা তুলে ধরবেন।’

শনিবার সকাল ৯ টা থেকে এ আসনের উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। বিএনপি প্রার্থী জানান, ৫০নং ওয়ার্ডের ৯ নম্বর কেন্দ্র যাত্রাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিএনপির এজেন্টরা গেলে তাদের স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে জোর দিয়ে বের করে দেয়া হয়।

এছাড়াও ৬৮নং ওয়ার্ডের হাজী আদর্শ মোয়াজ্জেম আলী হাই স্কুল, সানারপাড় রুস্তম আলী হাইস্কুল ও ফুলকলি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৬৬নং ওয়ার্ডের ভ্যামুইল আইডিয়াল স্কুল, সারুলিয়া ডগাইর দারুস সুন্নত ফাজিল ফাদ্রাসা,৭০নং ওয়ার্ডে ১৮৫নং কেন্দ্র (আমুলিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়), দেল্লা ও ৬৬নং ওয়ার্ডের ১৪৮ ও ১৪৯ কেন্দ্র থেকে বিএনপির সব পোলিং এজেন্টদের পুলিশের সামনেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বের করে দিয়েছে।

এদিকে ৪৮নং ওয়ার্ডের সব কেন্দ্র দখলের অভিযোগ করেছেন বিএনপি প্রার্থী।

নৌকা সমর্থকরা কেন্দ্রে তাদের দাঁড়াতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে ৫০ নম্বর ওয়ার্ড ধানের শীষের সমন্বয়কারী মিতু আক্তার। সরেজমিনে দেখা গেছে, মান্নান হাইস্কুল এন্ড কলেজ, শামীম শিকদার স্কুল এন্ড কলেজ ও সেরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে ধানের শীষের এজেন্ট নেই। মান্নান হাই স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা।

ঢাকা-৫ আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয় প্রার্থী। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. কাজী মনিরুল ইসলাম, বিএনপির সালাহ্ উদ্দিন আহম্মেদ, জাতীয় পার্টির মীর আব্দুর সবুর, গণফ্রন্টের এইচ এম ইব্রাহিম ভূঁইয়া, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আনছার রহমান শিকদার ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. আরিফুর রহমান।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪টি থানা নিয়ে এই আসনটি গঠিত। এগুলো হলো- মতিঝিল (আংশিক), যাত্রাবাড়ী, ডেমরা ও কদমতলী (আংশিক)।

এই আসনে ১৪টি ওয়ার্ডে মোট ১৮৭টি কেন্দ্রের ৮৬৪টি কক্ষে ১ হাজার ৯৫টি বুথে ভোটগ্রহণ চলছে। এখানে মোট ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ৭১ হাজার ১২৯ জন। যাদের মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৪১ হাজার ৪৬৪ জন ও নারী দুই লাখ ২৯ হাজার ৬৬৫ জন।

উল্লেখ্য, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লা গত ৬ মে মারা যাওয়ায় ঢাকা-৫ আসনটি শূন্য হয়।