বিএনপির সাথে পুলিশ চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিএনপির সাথে পুলিশ চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছিল বলে দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, প্রেস ক্লাবের সামনে পুলিশকে একা পেয়ে এবং তাদের উপর যেভাবে অতর্কিত হামলা হয়েছে তা চরম ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। পুলিশ কোনোদিন আমাদের প্রেস ক্লাবে ভেতরে প্রবেশ করে না। তাদের উপর হামলার সময় হয়ত দু-একজন ঢুকেছে।

‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২১’ উপলক্ষে সোমবার পুলিশ স্টাফ কলেজের স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা এবং স্বীকৃতি স্মারক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়ন ও উন্নয়ন নিরাপত্তা স্থিতিশীল রাখার নিয়ামক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ বাহিনী শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়ই নয় জঙ্গি নির্মূলেও কাজ করে যাচ্ছে। জঙ্গি উত্থানের সময় পুলিশকে আহত করা হয়। সে চিত্রও আমরা রাজশাহীতে এক জঙ্গিবিরোধী অভিযানে দেখেছি। গতকালও দেখলাম প্রেস ক্লাবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, ‌পেশাগত দায়িত্বপালন করতে গিয়ে প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পুলিশ সদস্য মারা যাচ্ছেন। ২০২০ সালে বিভিন্ন অবস্থায় বিভিন্ন পদের ৪৫৭ জন পুলিশ সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন। এদের মধ্যে ২০৮ জন কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমি নিহত ও মৃত্যুবরণকারী শোক সন্তপ্ত পুলিশ সদস্য পরিবারের প্রতি শোক-সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যদের আন্তরিকতা কর্মনিষ্ঠা এবং নিজেদের জীবন উৎসর্গ করার মত চরম ত্যাগে দায়িত্ব পালনে যে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন, সেজন্য পুলিশ বাহিনীসহ আমরা দেশবাসী গর্বিত। পুলিশ বাহিনী তাদের অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অগ্রযাত্রায় প্রথম দরকার আইনশৃঙ্খলা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সেটা পুলিশ সঠিকভাবেই করে যাচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, করোনায় যখন আমরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেছিলাম, যখন আমাদের কাছে তখন করোনার কোনো প্রতিষেধক ছিল না, করোনায় মৃত্যুবরণকারী মায়ের ডেড বডি হাসপাতাল থেকে সন্তান যখন নিতে আসছিল না, তখন পুলিশ সেই মায়ের ডেড বডি বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করেছে। করোনায় দুস্থ অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছে পুলিশ।

‘বর্তমান সরকার সর্বদাযই পুলিশ বাহিনীর উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। চাকরিরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের পরিবারের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রত্যেক পরিবারকে এককালীন আট লাখ টাকা প্রদানে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এছাড়া চাকরিরত অবস্থায় স্থায়ী অক্ষম ও অবসরে গেলে চার লাখ টাকা অনুদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

তিনি জানান, ২০১৩ থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত জামায়াত-বিএনপি, শিবির, হেফাজত ও দুর্বৃত্তদের হামলায় বিভিন্ন পদমর্যাদার ২৮ জন সদস্যের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে ২ কোটি ৭২ লাখ টাকার আর্থিক অনুদান করা হয়েছে। এছাড়া ২০২০ সাল থেকে আজীবন রেশনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

‘প্রেস ক্লাবের সামনে এবং ভেতরে বহিরাগতদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় পুলিশ প্রেস ক্লাবের দিকে তাক করে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করছে। বহিরাগত ও পুলিশ প্রেস ক্লাবে ঢুকলো। তাহলে কি প্রেসক্লাব অনিরাপদ?’

অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রেস ক্লাব অনিরাপদ হয়নি। আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন, আমিও আধঘণ্টা ধরে দেখেছি, আপনারাই ছবি তুলে প্রচার করেছেন। টিয়ার গ্যাসের বিষয়ে তিনি বলেন, ‌ঘটনা যখন অতিমাত্রায় চলে যায় তখন পুলিশ টিয়ার গ্যাস মেরে তাদেরকে সরানোর কৌশল মাত্র।