বাংলাদেশ-ভারতের মাঝে রক্তের সম্পর্ক রয়েছে: হানিফ

আমাদের দেশের সাথে যদি কারো কোন সমস্যা থাকে- দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। তিনি বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আত্মার নয় বরং রক্তের।

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেছেন, ‘শুধু প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে নয়- পৃথিবীর সকল দেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে জাতির পিতা পররাষ্ট্র নীতি হিসেবে ঘোষণা করে গেছেন। আমাদের দেশের সাথে যদি কারো কোন সমস্যা থাকে- দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে। কিন্তু কারো সাথে বৈরী আচরণ করে সম্পর্ক নষ্ট হবে- এটা হতে পারেনা। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক নীবিড়, অনেক গভীর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত এক কোটি ২০ লাখ লোককে আশ্রয় দিয়েছে। নয় মাস তাদের আহার জুগিয়েছিলো। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে, অস্ত্র দিয়েছে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে ভারতীয় সৈন্যরা বাংলাদেশে এসে যুদ্ধ করে স্বাধীনতার অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এখানে বহু ভারতীয় সৈন্য প্রাণ হারিয়েছেন’।

শহরের ওয়েলকাম চাইনিজ রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে জেলা আওয়ামীলীগ এ সভার আয়োজন করে।

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘আমাদের বৃহৎ প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত। তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক নষ্ট হোক- এরকম কাউকে আমাদের প্রয়োজন নেই। সমস্যা থাকতে পারে, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে। একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় সফরে আসবে- তাকে আসতে দেওয়া হবে না, এটা কোন শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পাকিস্তানি পেত আত্মরা, যারা ধর্মের দোহাই দিয়ে এ দেশে তাদের অবস্থান তৈরী করেছিলো, তারা অল্প-শিক্ষিত, অশিক্ষিত ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করেছিলো, আজকে তারাই আবার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসার কথা। সেটা নিয়ে নতুন করে ৭১ এর পরাজিত শক্তি হঠাৎ করে মাঠে সুর তুলছে। তারা নরেন্দ্র মোদীকে আসতে দিতে চায় না। আপনারা সিদ্ধান্ত নেওয়ার কে? আপনাদের রাষ্ট্র তো পকিস্তান ছিলো। রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে যখন একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী আসে, সবার দায়িত্ব অতিথিকে সন্মান করা। ’

আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। আওয়ামীলীগকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। আমার ক্ষুদ্র স্বার্থের কারণে নিজেদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করি, আমাদের শক্তি আমরা ক্ষয় করি। অনেক হয়েছে- আমরা চাই ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী আওয়ামীলীগ। যার কাজ হচ্ছে সরকারকে সহায়তা করা। সমাজ থেকে এ সমস্ত অপশক্তিকে নির্র্মূল করা।

আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশ্বের মধ্যে নিজেকে সৎ, যোগ্য রাষ্ট্র নায়ক হিসেবে হিসেবে প্রতিষ্টিত করতে সক্ষম হয়েছেন। শেখ হাসিনা অনেকের কাছে তুলনাময়ী নেতা হিসেবে পরিচিত।’

জেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত সভা জেলা সভাপতি গোলাম ফারুক পিঙ্কুর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক এড. নুর উদ্দিন চৌধূরী নয়নের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি ও সসমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলী, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি সফিকুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি এম আলা উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহিম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, আওয়ামী লীগ নেতা এমএ তাহের, একেএম নুরুল আমিন, সফিক মাহমুদ পিন্টু, মামুনুর রশিদ, ইসমাইল খোকন, আবুল কাশেম, হুমায়ূন কবির পাটওয়ারী, কাজী জামশেদ কবির বাকি বিল্লাহ, একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতারা।