আওয়ামী লীগে ছিলাম থাকব: কাদের মির্জা

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করার বিষয়ে সিগন্যাল দেওয়া হয়েছে বলে জানান নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের অভিবাকক শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত বলে আমি মানি। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে নাই। তাই আমি আওয়ামী লীগে ছিলাম আওয়ামী লীগেই থাকব।

রোববার বিকালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের ব্যানারে আয়োজিত ‘ঈদ পূর্ণমিলনী ও মিষ্টি বিতরণ’ অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি নিজ অনুসারীদের দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি পুন:গঠন করেন।

কাদের মির্জা বলেন, আজ আমি আওয়ামী লীগের ব্যানারে বক্তব্য দেওয়ায় আপনাদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, আমি তো আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেছিলাম, তাহলে কেন- আমি আওয়ামী লীগের ব্যানারে বক্তব্য রাখছি? আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এখন জননেত্রী শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগ থেকে আমাকে সিগন্যাল দেয়া হয়েছে আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়নি। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি আওয়ামী লীগে ছিলাম, আওয়ামী লীগেই থাকব। আওয়ামী লীগ আমার প্রাণের সংগঠন। তবে আমি দলের কোন পদ-পদবিতে থাকব না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন সদস্য হিসেবেই থাকব।

কাদের মির্জা আবারো আর কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়ে বলেন, আমি আগেও বলেছিলাম, আমি আর কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না। এখনো দৃঢ়তার সঙ্গে বলছি, আমি আগামীতে আর কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না। আমার এ সিদ্ধান্ত থেকে কেউ আমাকে সরাতে পারবে না। আপনাদের সাক্ষী রেখে বলতে চাই আমি কোনো আপরাজনীতি বিশ্বাস করি না। আমার আন্দোলন কোনো অপরাজনীতির বিরুদ্ধে নয়, নোয়াখালী, ফেনী, কোম্পানীগঞ্জের অপরাজনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন নয়, আমার আন্দোলন হচ্ছে একটি পরিবর্তনের পক্ষে আন্দোলন।

কাদের মির্জা আরও বলেন, রক্তের বদলে রক্ত নেইনি, নেবও না। কোনো মায়ের বুক খালি করে আমি আমার রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাই না। আমি চাই শান্তি, আমি চাই ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ, আমি চাই ঐক্যবদ্ধ সহযোগী সংগঠন।

বসুরহাট পৌরসভা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ঈদ পুনর্মিলনী মিষ্টি বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নাছের।

বক্তব্য রাখেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউনুস, হাসান ইমাম বাদল, বসুরহাট পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের, বসুরহাট পৌরসভা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পারভীন আক্তার মুরাদ, সহ-সভাপতি আক্তার জাহান বকুল, মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক, চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হেসেন কামরুল, শওকত আজিম জাবেদ, শেখ ফরিদ, নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মির্জা মাশরুর কাদের তাশিক প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা গত ৩১ মার্চ তার ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে দল থেকে পদত্যাগ করেন। এছাড়া কাদের মির্জার সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের বিগত ৫ মাস যাবত দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলে আসছে। এর জের ধরে তরুণ সাংবাদিক মুজাক্কিরসহ দুইজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়ে এখনও অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা-পাল্টা মামলায় অনেক নেতাকর্মী এখনো জেলহাজতে আছেন।