আল্লামা শফীর স্বরণ সভায় বক্তার যা বললেন

সততা, ধর্মীয় অধিকার আদায়, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি ও স্বীকৃতিসহ নানা আন্দোলনের পুরোভাগে থেকে বৃদ্ধ বয়সেও সাহসী পদক্ষেপের জন্য আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.) বিশ্বাস করেছেন সবাই।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে চলমান সংকট থেকে উত্তরণ ও শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.) জীবন-কর্ম শীর্ষক আলোচনাসভায় এসব কথা বলেন আঞ্জুমানে দাওয়াতে ইসলাহর আমির মাওলানা আনাস মাদানী।

আল্লামা শফীর (রহ.) খলিফা ও ভক্তবৃন্দের আয়োজনে এ আলোচনাসভায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আল্লামা আহমদ শফীর খলিফা ও ভক্তরা অংশ নিয়েছেন। অনুষ্ঠানের প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন আল্লামা শাহ আহমদ শফীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ মাদানী।

লিখিত বক্তব্যে মাওলানা আনাস মাদানী বলেন, আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে বহু অভিধায় অভিহিত করা গেলেও সব কিছু ছাপিয়ে তার সবচেয়ে বড় পরিচয়— তিনি সাদা মনের বিশাল হৃদয়ের এক মহানুভব ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ছিলেন উম্মাহর কল্যাণকামী। জনসাধারণের উদ্দেশ্যে তিনি যেমন বয়ান করেছেন, তেমনি আলেম সমাজকেও নসিহত করেছেন খোলামন নিয়ে। তার মিশন ছিল— আলেমরা শুধু বস্তুগত ও জাগতিক দৃষ্টি লালন করবেন না, বরং তারা আধ্যাত্মিকভাবে এগিয়ে যাবেন। তিনি আলেমদের জাগাতে চেয়েছেন শেকড় থেকে। তিনি বলতেন, আলেমগণ এক হয়ে গেলে দেশে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

উলামায়ে কেরামের অনৈক্যের সুযোগে সুবিধাবাদী কিছু নাস্তিক-মুরতাদ সরকারকে ভুল বুঝিয়ে ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে প্রলুব্ধ করে দেশের শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাই আলেমদের ঐক্য গড়তে হবে। বর্তমান সময়ে আমাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা অনৈক্য।

আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.) কখনও দায়িত্ব এড়িযে যাননি উল্লেখ করে মাওলানা আনাস বলেন, ২০১৩ সালে হেফাজতের ঘটনা এবং পরবর্তী সময়ে হজরতের আচরণগুলো তার প্রমাণ। তিনি সরকারের সঙ্গে শত্রুতাও দেখাননি এবং তাদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উপদেশ দিতেও কসুর করেননি। অনেকবার সরকারকে তিনি সতর্কও করেছেন। ফলে এই মধ্যমপন্থায় থাকার কারণে তিনি সরকার থেকে অনেক দাবি আদায় করতে পেরেছেন। কওমি স্বীকৃতি তার মধ্যে অন্যতম।

তিনি আরও বলেন, কওমি মাদ্রাসায় যে আশঙ্কাজনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি বর্তমানে বিরাজমান, এ সম্পর্কে আব্বাজান (রহ.) আগেই সতর্ক করেছিলেন। তিনি এ সমস্যা থেকে উত্তরণের পদ্ধতিও বাতলে দিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, নানা পর্যায় থেকে কওমি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে এবং আলেমদের আদর্শচ্যুত করার বহুবিধ ষড়যন্ত্র চলতেই থাকবে। এ পর্যায়ে আলেমরা যদি নীতি ও লক্ষ্যে অবিচল, ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারেন, তবে কোনো ষড়যন্ত্রই কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার ক্ষতি করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাওলানা লিয়াকত আলী। উপস্থিত রয়েছেন মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা রুহুল আমিন উজানভী, মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈফী, মাওলানা মাঈনুদ্দীন রুহী, মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমান, মাওলানা গোলাম মুহীউদ্দীন ইকরাম, মাওলানা আব্দুল আউয়াল কাউসারী, আব্দুল মালেক চৌধুরী, মাওলানা রেজাউল করীম যশোরী, মাওলানা ফয়েজ আহমদ প্রমুখ।