বিএনপির সাবেক এমপি মোমিনের মৃত্যুদণ্ড

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন সংঘটিত হত্যা-গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বগুড়া-৩ আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) পলাতক আবদুল মোমিন তালুকদার ওরফে খোকার মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বুধবার (২৪ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন।

ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম।

এর আগে, গত সোমবার (২২ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার দিন ঠিক করে আদেশ দেন বলে নিশ্চিত করেছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন।

তারও আগে গত ৩১ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল এ মামলায় যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করবেন বলে মামলাটি সিএভি (অপেক্ষমাণ) রেখে আদেশ দেন। ওই দিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন সুলতান মাহমুদ সিমন ও প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামি পলাতক থাকায় তার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন রাষ্ট্রীয় খরচে নিয়োজিত আইনজীবী আবুল হাসান।

আবদুল মোমিন তালুকদার খোকা ওরফে খোকা রাজাকারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে হত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ২০১১ সালে আদালতে মামলা করেন আদমদীঘির কায়েতপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সুবিদ আলী। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করতে আদমদীঘি থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। পরে ওই মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর হয়।

মোমিনের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে থেকে ২০১৮ সালের ৩ মে পর্যন্ত মামলার তদন্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে ৭১ সালের বিভিন্ন স্থানে ১৯ জনকে হত্যাসহ লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগসহ তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। পরে এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ফরমাল চার্জ গঠন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন বলেছিলেন, আসামির বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ ছিল। প্রথমটিতে ১০ জনকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। দ্বিতীয়টিতে পাঁচজনকে হত্যা, যার মধ্যে দুজনকে ঘটনাস্থলেই হত্যা, বাকি তিনজনকে ধরে রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা। আর তৃতীয় অভিযোগে চারজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

আবদুল মোমিন তালুকদার দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৮ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। পরে আদমদীঘি উপজেলা বিএনপির সভাপতি হন। এরপর বগুড়া জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন আবদুল মোমিন। তিনি ২০০১ ও ২০০৮ সালে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।