কুমিল্লায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট শেষ হলো

কোনও ধরনের সহিংসতা ছাড়াই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শেষ হয়েছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এখন ফলের অপেক্ষায় প্রার্থীরা। ইভিএমে ভোট হওয়ায় গণনার ঝামেলা নেই। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে ফল ঘোষণা করা হবে।

বুধবার (১৫ জুন) সকাল ৮টা থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকাল ৪টার দিকে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। তবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কেন্দ্রে যেসব ভোটার ঢুকেছেন নিয়ম অনুযায়ী তাদের ভোটগ্রহণ করা হবে।

এই নির্বাচনে পাঁচ জন মেয়র প্রার্থী লড়ছেন। পাশাপাশি ২৭টি ওয়ার্ডে ১৪২ জন কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে সবার দৃষ্টি মেয়র পদের দিকে। কে হবেন সিটি করপোরেশনের মেয়র– এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে ভোটারদের মধ্যে। আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে দুই প্রার্থী নৌকা প্রতীকের আরফানুল হক রিফাত এবং টেবিল ঘড়ি প্রতীকের মো. মনিরুল হক সাক্কুর নাম। সবার মনে প্রশ্ন– সাক্কু কি তৃতীয়বারের মতো জয়ী হবেন, নাকি প্রথমবারের মতো মেয়র হবেন রিফাত। তাদের মধ্যে একজনই মেয়র নির্বাচিত হতে চলেছেন বলে ধারণা করছেন কুমিল্লা নগরবাসী। এই দুই প্রার্থীও জয়ী হওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

সকাল ৯টায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রিফাত ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন। জয়ের বিষয়ে কতটুকু আশাবাদী– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’

অপরদিকে, সকাল সাড়ে ৯টায় নির্বাচনে সাবেক মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাক্কু ১২ নম্বর ওয়ার্ডের হোচ্ছামিয়া বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন। ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‌‘এখন পর্যন্ত ভোটের পরিস্থিতি ভালোই দেখছি। তবে ইভিএম খুবই স্লো। এ কারণে ভোটগ্রহণে দেরি হচ্ছে।’

তবে প্রচারণার শেষ দিনে সাবেক এই মেয়র বলেছিলেন, ‘নির্বাচনে হুমকি-ধমকি এগুলো থাকবেই। কিন্তু জোর খাটিয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে না আসতে দিলে অথবা তাদের কোনোভাবে প্রভাবিত করা হলে ভোটের ফলাফলে বড় প্রভাব ফেলবে।’

এদিকে, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রায় সব কেন্দ্রেই ইভিএম স্লো। এ কারণে ধীরগতিতে ভোট পড়ায় দিন শেষেও লম্বা সারিতে অপেক্ষা করছেন ভোটাররা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইভিএম সম্পর্কে ভোটারদের ধারণা না থাকার বিষয়টি। এজন্য ভোটাররাও বেশি সময় নিচ্ছেন বলে একাধিক প্রিসাইডিং অফিসার জানিয়েছেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেছেন, ‘সবার ভোট নেওয়া হবে। ভোট কাস্ট না হলে ৪টার পর যারা কেন্দ্রে থাকবেন তাদের ভোট নেওয়া হবে। যদি রাত ৮টাও বাজে তাও তাদের ভোট নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।’

রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতর সূত্রে জানা যায়, দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০ ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন, পুরুষ ভোটার এক লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন। আর হিজড়া ভোটার দুজন। মোট ১০৫টি ভোটকেন্দ্রের ৬৪০টি কক্ষে ভোটগ্রহণ হয়েছে।

নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১০৬ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন প্রার্থী হয়েছেন। মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী হলেন– আওয়ামী লীগ মনোনীত আরফানুল হক রিফাত (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু (টেবিল ঘড়ি), মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সার (ঘোড়া), রাশেদুল ইসলাম (হাতপাখা) ও কামরুল আহসান বাবুল (হরিণ প্রতীক)।