বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগ এক অবিচ্ছিন্ন অনুভূতির নাম: ওবায়দুল কাদের

বাংলা, বাঙালি, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগ এক অবিচ্ছিন্ন অনুভূতির নাম বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ২৩ জুন বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ, সর্বপ্রাচীন ও সবচেয়ে জনপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম, এরপর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বৈরশাসনবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সংগ্রামসহ আমাদের জাতীয় জীবনে যা কিছু মহৎ অর্জন, তার সবকিছুই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে অর্জিত হয়েছে।

তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ও ভ্রান্ত দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা, এরপর বাঙালি জাতির ওপর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচার, নির্যাতন, চরম অবেহলা ও দুঃশাসনে নিষ্পেষিত বাংলার জনগণের মুক্তি ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগ।

‘এ দেশের মানুষের আত্মপরিচয়, অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভাগ্য বদলের যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাত ধরেই। বাঙালির স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সাফল্যের রচয়িতা আওয়ামী লীগ।’

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই বাঙালি তার ভাষার অধিকার পেয়েছে, বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফার সাঁকো পেরিয়ে স্বাধীনতার স্বপ্নভূমিতে পদার্পণ করেছে, যোগ করেন কাদের।

আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এ নেতা বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই জনপদে বিগত ৭৩ বছর ধরে সমাজ-সংস্কৃতি-রাজনীতির সমন্বয় এবং রাজনীতিতে সততা, দেশপ্রেম ও সম্প্রীতির আদর্শকে আওয়ামী লীগ সর্বদা ধারণ করেছে।

‘জনগণের ভেতর থেকে উত্থিত একটি প্রগতিশীল সংগ্রামী রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ হচ্ছে সমাজের অগ্রসর চিন্তা-চেতনা, আদর্শ, লক্ষ্য ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের অগ্রবাহিনী। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় ঐক্যের রূপকার আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতির স্বতন্ত্র জাতি-রাষ্ট্র ও আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার সুমহান ঐতিহ্যের প্রতীক।’

‘গত সাত দশকের বেশি সময় ধরে গণমানুষের প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভাগ্যোন্নয়নে নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ এই পথচলায় অধিকাংশ সময় আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা।’

তিনি আরও বলেন, তাদের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণেই আওয়ামী লীগ সুদৃঢ় সাংগঠনিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে এবং জনমানুষের আবেগ ও অনুভূতির বিশ্বস্ত ঠিকানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের হাত ধরেই নির্দেশিত হয়েছে দেশ ও দেশের মানুষের এগিয়ে চলার পথ। একইভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির গতিপথও নির্ণিত হয়েছে জনকল্যাণ ও গণআকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে। আওয়ামী লীগ আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত-আধুনিক, সুখী-সমৃদ্ধশালী, কল্যাণকর ও শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র বিনির্মাণে বদ্ধ পরিকর।

‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ শুধু স্বাধীনতাই এনে দেয়নি, অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির শক্তিশালী ভিতও রচনা করেছে। বঙ্গবন্ধুর সরকার শূন্য কোষাগার হাতে নিয়ে স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করে পৃথিবীর বুকে অনন্য নজির স্থাপন করেছিল।’