বিত্ত-বৈভব বা ক্ষমতার জৌলুস কখনও তাঁকে আকৃষ্ট করতে পারেনি: প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ত্যাগ ও সাহসের কথা তুলে ধরে তার মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিত্ত-বৈভব বা ক্ষমতার জৌলুস কখনও তাঁকে আকৃষ্ট করতে পারেনি।

সোমবার (০৮ আগস্ট) বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন আদর্শ বাঙালি নারীর প্রতিকৃতি। নির্লোভ, নিরহংকার ও পরোপকারী এবং পার্থিব বিত্ত-বৈভব বা ক্ষমতার জৌলুস কখনও তাঁকে আকৃষ্ট করতে পারেনি।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সহধর্মিণী হয়েও তিনি ‘ফার্স্ট লেডি’ পরিচয়ে পরিচিত না হয়ে, সব সময় সাদামাটা জীবনযাপন করতেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি (ফজিলাতুন নেছা মুজিব) গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করতেন।
বঙ্গমাতা যে আদর্শ ও দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন, তা যুগে যুগে বাঙালি নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

স্বাধীনতার সংগ্রামে বঙ্গমাতার অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ ও জাতির জন্য তাঁর অপরিসীম ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং অবদানের কারণে জাতি তাঁকে ‘বঙ্গমাতা’ উপাধিতে ভূষিত করেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রদানের ক্ষেত্রেও বঙ্গমাতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা কারাগারে থাকাকালীন বঙ্গমাতা দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন, প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিতেন এবং কারাগারের বাইরে অবস্থা সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুকে অবহিত করতেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে লেখালেখিতে অনুপ্রেরণার মাধ্যমে বঙ্গমাতা আমাদের ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রেও তাৎপর্যময় অবদান রেখে গেছেন।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গৃহবন্দী থেকে এবং পাকিস্তানে কারাবন্দী স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা সত্ত্বেও তিনি সীমাহীন ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্য ‘স্রষ্টার দেওয়া অতি অমূল্য দান’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গমাতার ভূমিকার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন,স্বাধীনতার পর পরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সঙ্গে বঙ্গমাতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। বিশেষ করে নির্যাতিত মা-বোনদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন এবং সামাজিকভাবে তাদের প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ নেন।

১৫ আগস্টের নির্মমতার কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, স্বাধীনতা ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রকারী অপশক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতার সঙ্গে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবকেও নৃশংসভাবে হত্যা করে, যা জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।

শেখ হাসিনা বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।