প্রাণিসম্পদে অবশ্যই বীমা হওয়া উচিত: কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বর্তমানে একটি গাভীর দাম ৫-১০ লাখ টাকা। সেজন্য প্রাণিসম্পদে অবশ্যই বীমা হওয়া উচিত।

রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রাণিসম্পদ খাতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধিতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব প্রযুক্তির ভূমিকা আমাদের অবস্থান ও করণীয় শীর্ষক সেমিনারে‘ প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। আদর্শ প্রাণিসেবা লিমিটেড এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এসময় আমন্ত্রিত অতিথিদের বক্তব্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব কৃষিবিদ ড. মো. আওলাদ হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। এটা করার জন্য যা যা করা দরকার ছিল তার সব পরিকল্পনা মোতাবেক তিনি কাজ করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ঘাতকরা ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে সেই স্বপ্নকে নষ্ট করে দেয়। তারপর মুক্তিযোদ্ধাবিরোধীদের হাতে পিছিয়ে পড়তে থাকে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা বিনিমার্ণের দায়িত্ব নেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কৃষিবান্ধব সরকার কৃষি, কৃষক ও খামারীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করে, ফলে কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচনী ইশতেহারে পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্মসুচি ঘোষণা করেন আওয়ামীলীগ। সেই মোতাবেক কাজ করে চলেছে শেখ হাসিনার সরকার। ইতিমধ্যে তার সুফল দেশবাসী পেয়েছে। দুধ উৎপাদনে ঘাটতি থাকলেও ডিম, মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পুষ্টি জাতীয় খাবারের চাহিদা বেড়েছে। এই অতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে এবং উৎপাদিত পন্য রপ্তানী করতে উৎপাদন আরো ত্বরাণ্বিত করতে হবে। সবাইকে আরো দৃঢ়ভাবে কাজ করতে হবে।।

তিনি আরো বলেন, গবাদিপশু ক্রয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহ থেকে সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা জরুরি এবং এই ঋণ পরিশোধ নিশ্চিত করতে প্রাণিসম্পদ খাতে খামারীদের জন্য প্রাণিবীমা চালু করতে হবে। আর বীমা পদ্ধতি চালু করতে একটি যৌথ কমিটি গঠন করা দরকার, নীতিমালা কিভাবে করা যায়, এক্ষেত্রে কী কী প্রতিবন্ধকতা আছে, কী সুযোগ আছে তা নির্ধারণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

সেমিনারে কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল হোসেন, কৃষি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল্লাহ হারুন পাশা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও বীমা বিভাগের অধ্যাপক হাসিনা শেখ, ব্যাংক এশিয়ার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কায়সার হামিদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আলোচকগণ প্রাণিসম্পদ খাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহের অন্তর্ভুক্তি, ঋণ ও বিনিয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তারা বলেন, কৃষিঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংকারদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। এছাড়া, একদিকে গ্রাম পর্যায়ে এখনও বেশিরভাগ ব্যাংক শাখা স্থাপন করেনি। অন্যদিকে, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানসমূহ (এমএফআই) ও এনজিওগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কম সুদে ঋণ নিয়ে গ্রাম পর্যায়ে ২০-২৫% চড়া সুদে ঋণ বিতরণ করে। উল্লেখ্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদখাতে বিগত ১৩ বছরে অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। যদিও উন্নত দেশের তুলনায় এখনও গড় মাংস ও দুধ উৎপাদনে বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে