প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় মাঠের বাইরে আরও আট-দশগুণ মানুষ হবে: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে উপলক্ষ্য করে চট্টগ্রাম জুড়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে, মানুষের মধ্যে সাড়া জেগেছে। আমরা আশা করছি, জনসভায় পলোগ্রান্ড মাঠ পূর্ণ হয়ে বাইরে আরও আট-দশগুণ মানুষ হবে, ইনশাআল্লাহ।

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল পলোগ্রাউন্ড মাঠ পরিদর্শন শেষে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জনসভার সার্বিক প্রস্তুতি এবং পরিস্থিতি অত্যন্ত সন্তোষজনক বলে এসময় তিনি সাংবাদিকদের জানান।

হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব গতকালও বলেছেন, নয়াপল্টনের সামনেই তাদের জনসভা হবে। আসলে ওদের উদ্দেশ্য জনসভা করা নয়, দেশে একটা গণ্ডগোল লাগানো এবং দেশকে অস্থিতিশীল করা।

বিএনপির সুবিধার্থে তাদের আবেদন অনুযায়ী সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, তারা সেখানে না গিয়ে নয়াপল্টনে জনসভা হবে, এটি বারবার ঘোষণা দেওয়ার অর্থ হচ্ছে দেশে একটি গণ্ডগোল লাগানো। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার উদ্দেশেই তারা এটি বলছে। সরকার দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য কাউকে অনুমতি ও লাইসেন্স দিতে পারে না। তারা তো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে, সেটি আমরা হতে দেব না।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড অনেক বড় মাঠ, এখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জনসভা করেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাও জনসভা করেছেন। কানায় কানায় পূর্ণ জনসভা হয়েছে। অতীতেও মাঠ ছাড়িয়ে মানুষ বাইরে দাঁড়িয়েছে। আমরা যেভাবে সাড়া দেখতে পাচ্ছি, এবার কিন্তু মাঠের তুলনায় আট-দশ গুণ বেশি মানুষ মাঠের বাইরে থাকতে হবে। ক’দিন আগে এখানে বিএনপি জনসভা করেছিল। মাঠের তিন ভাগের একভাগ পেছনে রেখে তারা মঞ্চ বানিয়েছিল। আর সামনে যে মাঠ ছিল তার অর্ধেক পূর্ণ হয়েছিল।

জনসভার মধ্য দিয়ে দেশবাসীকে আওয়ামী লীগ কী বার্তা দিতে চায়?- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা যেহেতু জনগণের রায় নিয়ে সরকার গঠন করেছি, জনগণের সামনে হাজির হওয়া আমাদের দায়িত্ব। দেশ আগে কোথায় ছিল, এখন কোথায় গেছে, আমরা জনগণের জন্য কী করেছি, দেশকে আমরা কোথায় নিয়ে যেতে চাই, এগুলো জনগণের সামনে উপস্থাপন করা আমাদের দায়িত্ব। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জনগণের নেত্রী, তিনি সেই কথাগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরবেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে গণমানুষের দল, আমরা জনগণের জন্যই কাজ করি। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা গত চৌদ্দ বছরে বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করেছেন। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে উন্নীত হয়েছে। মানুষের মাথাপিছু আয় পাকিস্তানকে তো বহু আগেই ছাড়িয়েছে, ভারতেকেও ছাড়িয়ে গেছে। চট্টগ্রামে জনসভার পূর্বে প্রধানমন্ত্রী অনেকগুলো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের উদ্বোধন করবেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি স্লোগান দেয় ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’, বাংলাদেশকে পেছনে নিয়ে যাও। অর্থাৎ আবার বাংলাভাই, শাইখ আবদুর রহমানের জমানায় নিয়ে যাও। আবার হাওয়া ভবন ও খোয়াব ভবন সৃষ্টি কর, পাঁচশ’ জায়গায় বোমা ফোটাও, দুর্নীতিতে দেশকে আবার পরপর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন বানাও। তাদের স্লোগান অনুযায়ী আমরা বাংলাদেশকে পেছনে নিয়ে যেতে পারি না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজকে উন্নতির সোপানে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে, আমরা দেশকে পেছনে নিয়ে যেতে পারি না। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এই জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি। তাদের হাতে তো আমরা দেশটা তুলে দিতে পারি না। সেটাও আমরা জনগণের সামনে ব্যাখ্যা দেব।

এসময় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহম্মদ, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, উত্তর জেলার সভাপতি এম এ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিম পেয়ারুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।