ড্রাইভিং লাইসেন্স ও আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিট পাবেন যেভাবে

লাইসেন্স
লাইসেন্স

ড্রাইভিং লাইসেন্স ও আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিট পাবেন যেভাবে

ড্রাইভিং লাইসেন্সের পূর্বশর্ত হলো লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স।

গ্রাহককে প্রথমে লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করতে হবে। গ্রাহককে তার স্থায়ী ঠিকানা বা বর্তমান ঠিকানা (প্রয়োজনীয় প্রমাণাদিসহ) বিআরটিএ’র যে সার্কেলের আওতাভূক্ত তাকে সেই সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে। সার্কেল অফিস কর্তৃপক্ষ তাকে একটি শিক্ষানবিস বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করবে যা দিয়ে আবেদনকারী ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবে। ২/৩ মাস প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তাকে নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে নির্ধারিত কেন্দ্রে লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্ট-এ অংশ গ্রহণ করতে হবে। এসময় প্রার্থীকে তার লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স (মূল কপি) ও লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য কলম সাথে আনতে হবে। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য বয়স ন্যূনতম ২০ বছর এবং অপেশাদার এর জন্য ন্যূনতম ১৮ বছর হতে হবে।

লাইসেন্স
লাইসেন্স

লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
১। নির্ধারিত ফরমে আবেদন।
২। রেজিষ্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট।
৩। ন্যাশনাল আইডি কার্ড / জন্ম সনদ/পাসপোর্ট এর সত্যায়িত ফটোকপি।
৪। নির্ধারিত ফী, ১ ক্যাটাগরি-৩৪৫/-টাকা ও ২ ক্যাটাগরি-৫১৮/-টাকা বিআরটিএ’র নির্ধারিত ব্যাংকে (ব্যাংক এর তালিকা www.brta.gov.bd –তে পাওয়া যাবে) জমাদানের রশিদ।
৫। সদ¨ তোলা ০৩ কপি স্ট্যাম্প ও ০১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।

লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর পুনরায় একটি নির্ধারিত ফরমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফী প্রদান করে স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য সংশিস্নষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে। গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণপূর্বক স্মার্ট কার্ড ইস্যু করা হয়। স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রন্টিং সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে তা গ্রহণের বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়।

স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
১। নির্ধারিত ফরমে আবেদন।
২। রেজিষ্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট।
৩। ন্যাশনাল আইডি কার্ড / জন্ম সনদ/পাসপোর্ট এর সত্যায়িত ফটোকপি।
৪। নির্ধারিত ফী (পেশাদার- ১৬৮০/-টাকা ও অপেশাদার- ২৫৪২/-টাকা) বিআরটিএ’র নির্ধারিত ব্যাংকে জমাদানের রশিদ।
৫। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন।
৬। সদ্য তোলা ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।

পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রকৃতিঃ
(১) পেশাদার হালকা (মোটরযানের ওজন ২৫০০কেজি-এর নিচে) ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২০ বছর হতে হবে, (২) পেশাদার মধ্যম (মোটরযানের ওজন ২৫০০ থেকে ৬৫০০ কেজি) ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২৩ বছর হতে হবে এবং পেশাদার হালকা ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যবহার কমপক্ষে ০৩ বছর হতে হবে।
(৩) পেশাদার ভারী (মোটরযানের ওজন ৬৫০০ কেজির বেশী) ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২৬ বছর হতে হবে এবং পেশাদার মধ্যম ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যবহার কমপক্ষে ০৩ বছর হতে হবে।

[বি:দ্র: পেশাদার ভারী ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য প্রার্থীকে প্রথমে হালাকা ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে হবে এর ন্যূনতম তিন বছর পর তিনি পেশাদার মিডিয়াম ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং মিডিয়ম ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার কমপক্ষে ০৩ (তিন) বছর পর ভারী ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। ]

ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া:

(ক) অপেশাদারঃ
গ্রাহককে প্রথমে নির্ধারিত ফি ( মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ২৪২৭/- টাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিন পরে প্রতি বছর ২৩০/- টাকা জরিমানাসহ) জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিআরটিএর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্র ও সংযুক্ত কাগজপত্র সঠিক পাওয়া গেলে একইদিনে গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণ করা হয়। স্মার্ট কার্ড wপ্রন্টিং সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়।

(খ) পেশাদারঃ
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সধারীদেরকে পুনরায় একটি ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষায় উত্ত্তীর্ণ হওয়ার পর নির্ধারিত ফি ( মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ১৫৬৫/- টাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিন পরে প্রতি বছর ২৩০/- টাকা জরিমানাসহ ) জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিআরটিএর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে। গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণের জন্য গ্রাহককে নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে উপস্থিত হতে হয়। স্মার্ট কার্ড wপ্রন্টিং-এর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
১। নির্ধারিত ফরমে আবেদন।
২। রেজিষ্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট।
৩। ন্যাশনাল আইডি কার্ড / জন্ম সনদ/পাসপোর্ট এর সত্যায়িত ফটোকপি।
৪। নির্ধারিত ফী জমাদানের রশিদ।
৫। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন।
৬। সদ্য তোলা ১ কপি পাসপোর্ট ও ১কপি স্ট্যাম্প সাইজ ছবি।

ডুপ্লিকেট লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া :

ড্রাইভিং লাইসেন্স হারিয়েগেলে/চুরি হলে/পুড়ে গেলে/নষ্ট হলে প্রথমে ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর এবং রেফারেন্স নম্বর ও তারিখ (যদি থাকে) উল্লেখ করে থানায় জিটি করতে হবে এবং বাংলাদেশ পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ হতে ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স সংগ্রহ করতে হবে। এরপর ড্রাইভিং লাইসেন্সটি বিআরটিএ’র যে সার্কেল অফিস থেকে ইস্যু করা হয়েছে বা সর্বশেষ নবায়ন করা হয়ে সে সার্কেলের লাইসেন্সিং অথরিটি, সহকারী পরিচালক(ইঞ্জিনিয়ারিং) বরাবরে ড্রাইভিং লাইসেন্সর প্রতিলিপির জন্য আবেদন করতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্সটি যদি হাইসিকিউরিটি স্মার্ট কার্ড হয় তাহলে নতুন করে বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, আঙ্গুলের ছাপ, ডিজিটাল স্বাক্ষর)-এর প্রয়োজন নেই, অন্যথায় বায়োমেট্রিক্স প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট বিআরটিএ সার্কেল অফিসে হাজির হয়ে বায়োমেট্রিক্স প্রদান করে acknowledgement slip সংগ্রহ করতে হবে। স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রন্টিং-এর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে গ্রাহককে মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়। গ্রহকের মোবাইলে মেসেজ পাওয়ার পর acknowledgement slip প্রদর্শণপূর্বক সংশ্লিষ্ট বিআরটিএ সার্কেল অফিস থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
১। যথাযথভাবে পুরনকৃত ০৪ পৃষ্ঠার ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর ফর্ম (ফর্মের জন্য এখানে ক্লিক করুন)।
২। জিডি কপি ও ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স।
৩। নির্ধারিত ফী (হাই সিকিউরিউটি ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে ৮৭৫/-টাকা) বিআরটিএ’র নির্ধারিত ব্যাংকে জমাদানের রশিদ।
৪। সদ্য তোলা ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।

ড্রাইভিং লাইসেন্স ফী

লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফী:
(ক) ০১ (এক) ক্যাটাগরি-৩৪৫/-টাকা (শুধু মোটরসাইকেল অথবা শুধু হালকা মোটরযান অর্থাৎ যে কোনো এক ধরণের মোটরযান)
(খ) ০২ (দুই) ক্যাটাগরি-৫১৮/-টাকা  (মোটরসাইকেল এবং হালকা মোটরযান একসাথে অর্থাৎ মোটরসাইকেলের সাথে যে কোনো এক ধরণের মোটরযান)

স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স ফী :-
(ক) পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফী – ১৬৮০/-টাকা (০৫ বছরের নবায়ন ফীসহ)
(খ) অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফী – ২৫৪২/-টাকা (১০ বছরের নবায়ন ফীসহ)

ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন ফী:
(ক) পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন ফী – মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ১৫৬৫/- টাকা;
(খ)  অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন ফী – মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ২৪২৭/- টাকা;
(গ) পেশাদার ও অপেশাদার উভয় ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিন পার হলে প্রতি বছরের জন্য ২৩০/- টাকা হরে জরিমানা প্রদান করতে হবে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স এর প্রতিলিপি ফী:
(ক) হাই সিকিউরিউটি ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে ৮৭৫/-টাকা।

আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিট

বাংলাদেশ অটোমোবাইল এ্যাসোসিয়েশন আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিট প্রদান করে থাকে। বিআরটিএ  আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিট প্রদান করে না।

আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিটের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া নিম্নরুপ:

বাংলাদেশ অটোমোবাইল এ্যাসোসিয়েশন থেকে আবেদন সংগ্রহ করতে হবে, বাংলাদেশ অটোমোবাইল এ্যাসোসিয়েশন-এর ঠিকানা নিম্নরূপ:

বাংলাদেশ অটোমোবাইল এ্যাসোসিয়েশন
৩বি আউটার সার্কুলার রোড, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭।
মোবাইল: +৮৮০-১৭১১৮১৯৯৫৮-৯, +৮৮০-১৯৭৯২৯৯৭৮৬
ফোন: +৮৮০-০২-৯৩৬১০৫৪, ওয়েবসাইট: www.aabangladesh.com 
(অফিস টাইম: সকাল ১০:৩০ ঘটিকা হতে বেলা ৩:৩০ ঘটিকা পর্যন্ত)

আবেদনপত্রের সাথে ৪(চার) কপি স্ট্যাম্প সাইজ ও ০১ (এক) কপি পাসপোর্ট সাইজ রঙ্গিন ছবি, বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্সের সত্যায়িত ফটোকপি, পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি এবং আবেদন ফি হিসেবে ২৫০০/- টাকা জমাদিতে হবে।

আবেদনপত্রের সফট কপির জন্য এখানে ক্লিক করুন।

উপরের প্রক্রিয়া বাংলাদেশ অটোমোবাইল এ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক পরিবর্তীত হতে পারে।