ফরিদপুর-১ আসনে দোলনের ঈগলের চাপে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি রহমানের নৌকা

ফরিদপুর-১ আসনে এবার কঠিন এক বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছেন নৌকার প্রার্থী আব্দুর রহমান। স্থানীয় আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশের সমর্থন পাচ্ছেন না তিনি। তারা একজোট হয়ে সমর্থন করছেন জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল মার্কার আরিফুর রহমান দোলনকে, যার জন্য তারা একাট্টা হয়ে নেমেছেন ভোটের মাঠেও।

নির্বাচনী প্রচারণার ১৬তম দিনে বুধবার ঈগল মার্কার প্রার্থী আরিফুর রহমান দোলন গোটা দিন চষে বেড়ান মধুখালীর বিভিন্ন এলাকা। এদিন আব্দুর রহমানের খাস তালুকে একের পর এক গণসংযোগ আর নির্বাচনী সভা করেন দোলন। এসব সভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নেতৃবৃন্দ ঈগল মার্কার সমর্থন করে বক্তব্য দেন।

সর্বস্তরের হাজার-হাজার জনতা ঈগল মার্কাকে সমর্থন জানিয়ে মিছিল সহকারে মধুখালীর বিভিন্ন সভায় দোলনকে স্বাগত জানান। তারা এসময় এতদিন ধরে নানা বঞ্চনা আর সমস্যা কথা তুলে ধরেন। ঈগল মার্কার প্রার্থী দোলন এমপি নির্বাচিত হলে পর্যায়ক্রমে সকল সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।

দোলন বলেন, ‘ফরিদপুর-১ আসনের আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালীর মানুষের জীবনমান উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে জীবনবাজি রেখেছি। এখানকার মানুষের অধিকার ও সম্মান প্রতিষ্ঠা করতেই আমি ভোটে লড়ছি। আমি এমপি হলে তিন উপজেলার সব মানুষের এমপি হবো। আপনারা আমাকে এতদিন ধরে সবসময় পাশে পেয়েছেন। এমপি হলে আরো বেশি করে পাবেন।’

দোলন পবিত্র কাবা শরীফ ছুঁয়ে নেওয়া তাঁর শপথের কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘আপনারা আমাকে এমপি বানালে আমি সম্মানী ভাতার এক টাকাও নিজের জন্য ব্যয় করবো না। ফরিদপুর-১ আসনের দরিদ্র মানুষের কল্যাণে বিলিয়ে দেবো।’

ফরিদপুর-১ আসন নিয়ে তাঁর পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে দোলন বলেন, ‘আমি আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালীকে স্মার্ট ও মডেল জনপদ হিসেবে গড়তে চাই। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নিজ অর্থায়নের পাশাপাশি সরকারের বরাদ্দ দিয়ে উন্নয়ন কাজ করবো।’

কোনো প্রার্থীর পক্ষে ভয়ভীতি দেখালে ঘাবড়ে না গিয়ে সমুচিত জবাব দিতে ঈগল মার্কায় ভোট দিতে জনতার প্রতি আহ্বান জানান দোলন। বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন করতে নির্বাচন সরকার বদ্ধপরিকর। কেউ ভয়ভীতি দেখালে আপনার ঘাবড়াবেন না। তারা কিছুই করতে পারবে না। দেশে আইন আছে, নির্বাচন কমিশন আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা আছে, তারা ব্যবস্থা নেবে।’

আরিফুর রহমান দোলন বলেন, ‘এই আসনের সাবেক এমপিরা মানুষের জন্য কিছুই করেননি। একজন তো অনিয়ম, দুর্নীতি, ভূমিদস্যুতা, দুর্ব্যবহার ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি। আরেক জন সকালে এক দল বিকালে আরেক দল করেন। এমন নেতাদের ওপর ভরসা রাখবেন না। অতীতে যারা ঘাড় ধরেছে, তারা এখন যদি পায়ে ধরেও তাদের কথায় ভুলবেন না।’

তরুণ রাজনীতিক ফরিদপুর-১ অঞ্চলে কৃষিভিত্তিক শিল্প ও বিশেষ শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছেন। বিষয়টি উল্লেখ করে ঈগল মার্কার প্রার্থী বলেন, ‘শিল্প-কারখানা গড়ে তুলে এখানকার হাজার হাজার ছেলে মেয়ের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো। এছাড়া আমি একটি কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার ঘোষণাও দিয়েছি।’

এসময় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার কথা স্মরণ করিয়ে দেন। আগামী ৭ জানুয়ারি সারাদিন নির্ভয়ে ঈগল মার্কাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহ্বান জানান স্বতন্ত্র এ প্রার্থী।

সভাগুলোতে উপস্থিত নারীদের উদ্দেশ করে দোলন বলেন, ‘আগামী ৭ জানুয়ারি সকাল সকাল ভোটকেন্দ্রে যাবেন। ঈগল মার্কা বিজয়ী হলে আপনাদের অধিকার ও সম্মান প্রতিষ্ঠা হবে। আমি কারো হক নষ্ট হতে দেবো না। আপনাদের জন্য এবং শিশুদের জন্য ২৪ ঘণ্টা সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করবো।’

প্রসঙ্গত, ঢাকা টাইমস সম্পাদক ও কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান দোলন এ অঞ্চলের কৃতী পুরুষ প্রয়াত কাঞ্চন মুন্সীর উত্তরসূরি। গোটা অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারসহ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে পরিবারটির ঐতিহাসিক ভূমিকা রয়েছে।

আরিফুর রহমান দোলন ক্লিন ইমেজ, জনসমর্থন, গ্রহণযোগ্যতাসহ সব দিকেই প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে ভোটারদের কাছে এগিয়ে রয়েছেন। দোলনের প্রতীক ঈগল মার্কার পক্ষে ফরিদপুর-১ আসনে ব্যাপক গণজোয়ার তৈরি হয়েছে।