বার্নিকাটের বাসায় আ.লীগ নেতারা; সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাটের বাসা ঘুরে এসেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল। নেতারা একে নৈশভোজের আমন্ত্রণ বললেও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে একাধিক নেতা স্বীকার করেছেন।

সোমবার রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বার্নিকাটের বাসায় যান। এ সময় কাদেরের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূত একান্তে মিনিট পাঁচেক কথা বলেন। এ সময় দুই জনে কী কথা হয়েছে, সেটির বিষয়ে অন্য নেতারা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি।

বরাবর জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ প্রভাবশালী দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা বৈঠক করেন। সাধারণত নৈশভোজ বা মধ্যাহ্নভোজের নামেই দেখা করেন তারা।আগামী অক্টোবরে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হচ্ছে, এটা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে বিএনপি এখনও এই নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে কিছু জানায়নি। গত নির্বাচনের মতোই তারা এবারও বর্জন করবে নাকি একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে, সে দিয়ে তাকিয়ে দেশের মতো আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোও।

দশম সংসদ নির্বাচনের আগেও যুক্তরাষ্ট্র এভাবে ঘন ঘন বৈঠক করেছে দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ-বিএনপির সঙ্গে। বিএনপি-জামায়াত জোটের সহিংস আন্দোলনের সময় তারা সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের পক্ষে সরকারকে প্রকাশ্যেই চাপ দিয়েছিল। তবে সরকার সে চাপ উপেক্ষা করে সংবিধানের বিধান অনুযায়ী নির্বাচন করে।

আওয়ামী লীগের সূত্র জানায়, আজকের বৈঠকেও আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার বিষয়টিই তুলে ধরেছে। এর পাশাপাশি গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হয়েছে দুই পক্ষে।

বৈঠকে উপস্থিত একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বার্নিকাট আমাদের বলেছেন, তিনি গাজীপুর সিটি করপোরশেন নির্বাচন দেখতে গিয়েছিলেন এবং প্রার্থীদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। নির্বাচন পরিবেশ তার কাছে সন্তোষজনক মনে হয়েছে।’আরেকজন নেতা বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছাড়াও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় এবং রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও কথা হয়েছে দুই পক্ষে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার অকারণে অযুহাত তৈরি করছে জানিয়ে বাংলাদেশে পক্ষে থাকতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ নেতারা। আর বার্নিকাট বলেন, তার দেশও মিয়ানমারকে এই মানবিক সমস্যা সমাধানে চাপ দিয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত রাখবে।

আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, ফারুক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, সাবেক রাষ্ট্রদূত এম জমির।

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পলিটিকাল অ্যাফেয়ার্স সেকেন্ড সেক্রেটারি কাজী রহমান দস্তগীর ও জ্যাকব জে লেভিনসহ দূতাবাসের উচ্চপদস্ত কর্মকর্তারাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।