জনরোষ থেকে বাঁচতেই কোটা বাতিল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী : রিজভী

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে জনরোষ থেকে বাঁচতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে প্রায় দু’মাস আগে জাতীয় সংসদে সম্পূর্ণরূপে কোটা বাতিল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেদিন আমরা বলেছিলাম, এই ঘোষণা একটি নাটক ও ছাত্র আন্দোলনের প্রতি প্রতারণা। এখন সেটি অক্ষরে অক্ষরে দৃশ্যমান হচ্ছে। আসলে সেদিন প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে জনরোষ থেকে বাঁচতে প্রতারণার কৌশল নিয়েছিলেন।’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আন্দোলনকারীদের প্রতি সরকারের আচরণে এটা আবারও প্রমাণিত হলো যে, শেখ হাসিনা যাদের ওপর ক্ষুব্ধ হন তাদের ভিটে-মাটিতে ঘুঘু চড়িয়ে দিতে মোটেই দ্বিধা করেন না।

এ সময় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ধারাবাহিক বর্বর পৈশাচিক হামলার নানা চিত্র তুলে ধরেন রিজভী।

আলিয়া মাদ্রাসার ক্যাঙ্গারু কোর্টে সাজানো মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে বলেও জানান বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লায় দায়ের করা মিথ্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আপিল বিভাগ স্থগিত করেছেন-যা নজিরবিহীন ঘটনা।

রিজভী বলেন, ন্যায় বিচার পাওয়া মানুষের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল হলো সর্বোচ্চ আদালত এবং জামিন পাওয়া মানুষের অধিকার। কিন্তু খালেদা জিয়াকে হাইকোর্ট জামিন দেওয়ার পর সর্বোচ্চ আদলত কর্তৃক জামিন স্থগিত করার ঘটনাটি সম্পূর্ণরূপে সরকার নির্দেশিত। খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনর জিঘাংসার শিকার।

তিনি আরও বলেন, অবৈধ সরকার নিম্ন আদালতকে সম্পূর্ণভাবে কব্জায় নিয়ে এখন সর্বোচ্চ আদালতকেও হাতের মুঠোয় নিয়েছে কি না সেটি নিয়ে জনগণের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। হাইকোর্ট জামিন দিলে সে জামিন স্থগিত করা হয় এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। শেখ হাসিনা জোর করে ক্ষমতায় আছেন বলেই বিচারিক প্রক্রিয়ায় ন্যায় বিচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত করা শেখ হাসিনার হুকুমেরই বাস্তবায়ন বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।

কর্মসুচি:

বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বৃহস্পতিবার ঢাকায় নয়াপল্টনে দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিকেল ৩টায় বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য ইতোমধ্যে পুলিশ কমিশনার ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর অবহিতপত্র জমা দেয়া হয়েছে।

এছাড়া আগামী ৯ জুলাই বিএনপির উদ্যোগে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য ইতোমধ্যে রমনা ইন্সটিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ এবং মহানগর নাট্যমঞ্চের যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে। এই দু’টি স্থানের মধ্যে যেকোন একটিতে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।