খালেদা জিয়ার ‘সঠিক স্বাস্থ্য রিপোর্টে’ বাধা দিচ্ছে সরকার: ফখরুল

কারান্তরীণ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঠিক স্বাস্থ্য রিপোর্ট না দেয়ার জন্য সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের চিকিৎসকদের বাধ্য করেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বেগম জিয়া ‘অত্যন্ত অসুস্থ’ দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত ২৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার যে ব্লাড পরীক্ষা হয়েছে সেখানে তাঁর ফাস্টিং সুগার হচ্ছে ১৪.৫। চিন্তা করা যায় না। ১৪.৫ যদি তার নিয়মিত সুগার হয় তাহলে সেটা তার হার্টে এফেক্ট করতে পারে, কিডনিতে এফেক্ট করতে পারে বা লাঞ্চে এফেক্ট করতে পারে।’

পানি ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৩ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এতকিছুর পরেও দুর্ভাগ্য আমাদের, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাবেক পিজি) ডাক্তাদের এদেশের মানুষ শ্রদ্ধা করে। অথচ সরকারের চাপে তারা আজকে সত্যি রিপোর্ট দিতে পারলেন না। এবং সেটা তাদেরকে এ সরকার বাধ্য করেছে সঠিক রিপোর্ট না দিতে।’

ফখরুল বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের, আজকে আমাদের দেশে বিচার বিভাগ, উচ্চ আদালত সঠিক বিচার করতে পারে না। কারণ, একটা একনায়কতান্ত্রিকতা চলছে দেশে। ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা চলছে দেশে।’

বিএনপির এ শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আজকে এ সরকার ব্যাংকিং সেক্টরকে ধ্বংস করে দিয়েছে।  দেশের অর্থনীতি, শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্য খাত ধ্বংস করেছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বলতে কিছু নাই।’

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আজকে দুই বছর হয়ে গেল সরকার এ সমস্যা সমাধান করতে পারেনি। আজকে অনেকে বলে, সরকার ইচ্ছা করে এটাকে জিইয়ে রেখেছে। কারণ, এতে তাদের লাভ হয়। পশ্চিমা বিশ্ব থেকে সমর্থন পাওয়া যায়। আর যে সাহায্য-সহযোগিতা আসে তার থেকে  ভাগ-বাটোয়ারা পাওয়া যায়।’

পানির ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে পানির দাম ৫ বার বাড়লো। কিন্তু সে পানি মুখে দেয়া যায় না, খাওয়া যায় না। বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৮ বার। কারণ পাওয়ার প্লান্টের নামে তারা যে লুট করেছে তার ভর্তুকি দেয়ার জন্য।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে মানুষের পকেট কেটে তারা বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। যদি কোনও পাওয়ার প্ল্যান্ট বিদ্যুৎ সরবরাহ না করে তবুও তাদেরকে ভর্তুকি দিতে হবে, এই হচ্ছে তাদের চুক্তি। গতকাল জানলাম, প্রতি বছর ৫১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এই টাকা বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট থেকে নেয়া হচ্ছে।’

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনসহ বিএনপি এবং এর সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী।