সরকারের ভ্রান্ত-নীতিতে বিপর্যস্ত জনগণ, ‘ভঙ্গুর’ স্বাস্থ্য-অর্থনীতি খাত: ফখরুল

দেশজুড়ে মহামারি করোনা ভাইরাস মোকাবিলা করতে গিয়ে সরকারের ভ্রান্ত-নীতির কারণে জনগণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, ‘করোনা মোকাবিলায় দেশের স্বাস্থ্যখাত যে কতটা ভঙ্গুর সেটা প্রমাণিত হয়ে গেছে। ভ্রান্ত-নীতির এই সময়ে বারবার জিয়াউর রহমানের কথা মনে পড়ছে। তাঁর নেতৃত্ব যদি আর কিছু দিন পেতাম, তাহলে হয়তো এই ভঙ্গুর স্বাস্থ্যব্যবস্থা, এই ভঙ্গুর অর্থনীতি আজ দেখতে হতো না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারপরও আমরা আশাবাসী। জিয়ার আদর্শ, ১৯ দফা কর্মসূচি, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ এগুলোকে সামনে নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই।’

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার রাতে ‘শহীদ জিয়ার কৃষি বিপ্লব’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের সরকার উন্নয়নের কথা বলে, প্রবৃদ্ধির কথা বলে। কিন্তু কোনও প্রবৃদ্ধি, কোনও উন্নয়নই সফল হবে না, যদি না সত্যিকার অর্থেই বৃহত্তর জনগোষ্ঠী তা থেকে লাভবান হয়। আজকে এক শ্রেণির মানুষ অনেক উপরে উঠে গেছে, আরেক শ্রেণির মানুষ নিচে নেমে গেছে। এ অবস্থায় কখনও সুষম অর্থনৈতিক উন্নয়ন হতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ভুলে যাই যে, ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগের দুর্নীতি ও ভুল নীতির কারণে দেশে ভয়াবহ রকম একটা দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। বলা হয়ে থাকে, তখন দেশে অন্তত ১০ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। তখন খাদ্যের অভাব ছিল না। অমর্ত্য সেনা তাঁর বইয়ে পরিষ্কার বলেছেন- সেটা ছিল মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ। অর্থাৎ একদিকে ম্যানেজমেন্টের সমস্যা, অন্যদিকে দুর্নীতি।’

‘জিয়াউর রহমান দায়িত্বে আসার পর কৃষিতে গুরুত্ব দিয়ে সেচ, উন্নত বীজ, কৃষ্টি উপকরণসমূহ সহজলভ্যকরণ, সার-কীটনাশকের ব্যবস্থা করলেন। দেশও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলো। একইসঙ্গে তিনি পল্লী বিদ্যুৎ নিয়ে এসেছিলেন। তাঁর এই যুগান্তকারী কাজ গ্রামীণ অর্থনীতিতে অনেক বেশি ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল’-যোগ করেন ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি যখনই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে এসেছেন তখনই কৃষির ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। কৃষকেরা কৃষি ঋণের ব্যাপারে হয়রানি হতেন, ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে গ্রেফতার হতে হতো।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসেই সুদসহ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত কৃষি ঋণ মওকুফ করে পরবর্তীকালে সহজ শর্তে কৃষকদের জন্য ঋণের ব্যবস্থা করেছিলেন বেগম জিয়া। ২০০১ সালে পুনরায় দেশের দায়িত্ব নিয়ে কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।’

বিএনপি কমিউনিকেশন আয়োজিত ওই ভার্চুয়াল আলোচনায় জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের আহ্বায়ক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু অংশ নেন।