মনোনয়ন বাণিজ্য করার জন্য নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি: হানিফ

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, প্রতিটা নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপির প্রার্থী পরাজিত হয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলে সরকারের এই প্রহসনের মুখোশ উন্মোচন করার জন্য নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও মনোনয়ন বাণিজ্য করতেই তারা নির্বাচনে অংশ নেয়। বিএনপির ভোটাররা কেন্দ্রে আসেনি। কিন্তু নওগাঁতে আমাদের ৩৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।

রোববার ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৭তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, চিত্রাঙ্কন ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি। অনুষ্টানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন।

হানিফ বলেন, বিএনপি দাবি করে ২৫ % তাদের ভোটার আছে, তাহলে তাদের ভোটাররা কোথায়? এতেই প্রমাণিত হয় তারা মনোনয়ন বাণিজ্য করার জন্য নির্বাচনে অংশ নেয় ‌। নির্বাচনের শেষে পরাজিত হওয়ার পরে একটা প্রহসনের নিয়মিত বক্তব্য দেয় বিএনপি। আবার বিএনপির নেতারা বলছে সরকারের মুখোশ উন্মোচন করতে অংশ নিচ্ছে তারা। সরকারের মুখোশ উন্মোচন করতে গিয়ে বিএনপির মুখোশ উন্মোচন হয়ে গেছে।

বিএনপির প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সামনে নির্বাচনে অংশ নিলে কোন নাটক প্রহসনের জন্য নির্বাচনে অংশ না নিয়ে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিন।

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া গৃহবন্দি আছে বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মাহাবুবুল আলম হানিফ বলেন, মানুষ কতটা নির্লজ্জ হলে মিথ্যা কথা বলতে পারে। ২০০৭ সালে বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদের নেতৃত্বে এতিমের টাকা আত্মসাৎ করার দায়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। এতিমের টাকা আত্মসাতের তথ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতের রায়ে কারাদণ্ড হয়েছে। বহুবার মিথ্যাচার করে এদেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু জনগণ জানে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছে যা আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। তাই তাকে আদালত কারাদণ্ড দিয়েছে।

বিএনপির দাবি তাদের লাখ লাখ নেতাকর্মী আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের এত নেতাকর্মী থাকা সত্বেও খালেদা জিয়াকে মুক্তির জন্য মাঠে আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে।
তাদের এমন ব্যর্থ আন্দোলন বহুবার দেখেছি।

তিনি বলেন, মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তি দিয়েছেন। শেখ হাসিনার মানবিকতার কারণে বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া বাসায় আছেন । বিএনপি নেতাকর্মীদের উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা, তা না করে আবার নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছে, খালেদা জিয়া নাকি গৃহবন্দী আছে। জনগণ আপনাদের বিশ্বাস করে না। মিথ্যা বলতে বলতে মিথ্যা পারদর্শী হয়েছে বিএনপি। মিথ্যাচার করে বাংলাদেশের জনগণকে বারবার বিভ্রান্ত করতে পারবে না তারা।

মাহাবুবুল আলম হানিফ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটের এমসি কলেজে ও বেগমগঞ্জে ধর্ষন ও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছিল তাদের সকলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা জঘন্য ধর্ষণের সাথে সম্পৃক্ত তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ইতিমধ্যে পাশ হয়েছে। অধ্যাদেশ আকারে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সিলেটের রায়হানকে হত্যাকারী এসআই আকবরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সকল অন্যায় অপরাধের বিরুদ্ধে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

সভার সভাপতি বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ প্রধানমন্ত্রী কৃষক-রত্ন শেখ হাসিনা এমপির আদরের ভাই শিশু রাসেল হত্যার তীব্র নিন্দা ও ’৭৫ এর নির্মম হত্যাকাণ্ডের বেনিফিশিয়ারী জিয়াউর রহমানের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে মরোনত্তর বিচার দাবী করেন।

তিনি বলেন, শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে বাঙ্গালী তাকে ঘিরে একটি নতুন স্বপ্ন দেখার চেষ্টা করতে পারত, যুব সমাজের নেতৃত্ব দিতে পারত সর্বপরি জাতি গঠনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারত আজ আমরা যা সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের মধ্যে খুঁজি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা এতটুকু সান্তনা দিতে পারি যে, নেত্রী আপনার আদরের ভাই আজ আপনার কাছে না থাকলেও আমরা লক্ষ লক্ষ কৃষক সন্তান আপনার ভাই হিসেবে পাশে রয়েছি। প্রয়োজনে আমরা আপনার নির্দেশে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে শেখ রাসেলের রক্তের ঋণ শোধ করব।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, শেখ রাসেলের জন্মদিন উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ্জ আকবর আলী চৌধুরী, সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাবিবুর রহমান মোল্লা, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু, কৃষিবিদ শাখাওয়াত হোসেন সুইট,সাবেক সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য একেএম আজম খানসহ আরও অনেকে।