পদ্মা সেতু উদ্বোধনের উৎসবে ১০ লাখ লোকের সমাগমের আশা

মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়িতেই হবে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের উৎসব। এতে ১০ লাখের বেশি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সমাগমের প্রত্যাশা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

বৃহস্পতিবার ( ২ জুন) সেতু উদ্বোধনের পর জনসভা সফল করতে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল পদ্মা সেতুর কাঠালবাড়ী অংশে জনসভা স্থলে আসেন।এ সময় সমাবেশ স্থল ঘুরে সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানান তিনি।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, শরিয়তপুরের জাজিরা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত অন্তত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১০ লাখ মানুষের বেশি সমাগম হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী উদ্যোগের কারনেই পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চল বাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হতে যাচ্ছে। এই স্বপ্নপূরণে কোটি কোটি মানুষ অপেক্ষার প্রহর গুনছে। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে অপেক্ষার পরিসমাপ্তি ঘটবে। উদ্বোধনের দিন সারা দেশের মানুষ উৎসবে অংশ নিবে। কেউ সমাবেশ স্থলে এসে, আবার কেউ টেলিভিশনের মাধ্যমে। আবার কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উৎসবে মেতে উঠবে।

নাছিম বলেন, পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী এলাকায় জনসভা করা হবে। এ জনসভা কেন্দ্র করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা এবং ঢাকা বিভাগের শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এ দিনটি ঘিরে সারা দেশের মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সে জনসমাবেশে ১০ লাখের বেশি জনসাধারণ উপস্থিত থাকবেন। এই জনসভা সফল করতে আজ আমরা এলাকা পরিদর্শনে এসেছি।

তিনি বলেন, এ সেতু উদ্বোধন হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ২ শতাংশের বেশি উন্নীত হবে। শেখ হাসিনার সাহসী পদক্ষেপে পদ্মা সেতু আজ আমরা বাস্তবে দেখছি। পদ্মাপাড়ের আশপাশের এলাকার কৃষি, সামাজিক, অর্থনীতি ও শিল্পে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে। আর এ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে।

আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, বিএনপির নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে আমাদের কোন সমস্যা নেই। তারা যদি কোন সন্ত্রাসী কার্যক্রম, ৭৫ এর ঘাতকদের মতো খুন সন্ত্রাস করতে চায় কার্যক্রম পরিচালনা করে তাহলে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মোকাবিলা করবো।

উদ্বোধনের দিন শরিয়তপুরের জাজিরা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তার পাশাপাশি সিসি টিভির ফুটেজের আওতায় থাকবে বলে বলেন আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক মুক্তি ঘটবে। এর ফলে মোংলা নৌ বন্দর, পায়রা নৌ বন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরে অর্থনৈতিক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হবে। পদ্মা সেতুর যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে রেললাইনও যুক্ত হওয়ায় কি ধরনের অর্থনৈতিক তৎপরতা বাড়বে, তা চিন্তাই করা যায় না। পদ্মা সেতু আমাদের স্বপ্নের সেতু, এর জনসভাও ঐতিহাসিক হবে।

এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন, মির্জা আজম ও এস এম কামাল হোসেন, জাতীয় সংসদের চীফ হুইফ নূর-ই আলম চৌধুরী এমপি, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, শরিয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন, জাজিরা উপজেলা চেয়ারম্যান মোবারক শিকদারসহ এছাড়া এসএসএফ, জেলা প্রশাসন, পুলিশসহ একাধিক সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পদ্মা নদীর বুকে নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার কোটি টাকায় ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর কাজ ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে উদ্বোধন করেছিলেন শেখ হাসিনা।