দুদকের মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেদোয়ানের কারাদণ্ড

মুক্তিযোদ্ধাদের ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রেদোয়ান আহমেদের তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডের পাশাপাশি তাকে ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৪ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ-২ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মহাসচিব শাহ আলম চৌধুরীকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে রেদোয়ান আহমেদ পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাসহ সাজা পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

দুদকের আইনজীবী মীর আহম্মেদ সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলার অপর দুইজন আসামি হলেন মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের তৎকালীন চেয়ারম্যান কবির আহমেদ ও মহাসচিব শাহ আলম চৌধুরী।

২০২০ সালের ২০ আগস্ট রেদোয়ান ও শাহ আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

মামলার নথিপত্র থেকে জানা যায়, আদালতে মামলাটির অভিযোগপত্র জমা হওয়ার পর আসামি রেদোয়ান আহমদের পক্ষে মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ২০০৭ সালে একটি রিট আবেদন করা হয়েছিল। ২০১০ সালের ২৫ অক্টোবর হাইকোর্ট ওই আবেদন খারিজ করে দেয়।

হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদনও আপিল বিভাগ ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর খারিজ করে দেয়। ওই রায় পর্যালোচনার জন্য আপিল বিভাগে ২০১৬ সালে রিভিউ আবেদন করেন রেদোয়ান।

মামলায় অভিযোগে বলা হয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ হাট-বাজার থেকে প্রতি বছর যে টাকা মন্ত্রণালয় পায় তার ৪ ভাগ টাকা দুস্থ ও বেকার মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার জন্য মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলকে দেওয়া হয়, যার পরিমাণ প্রায় ৫ কোটি টাকা। এই টাকা জমা রাখার জন্য সোনালী ব্যাংক মগবাজার শাখায় একটি হিসাব রয়েছে।

২০০২ সালে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান রেদোয়ান আহমেদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অর্থসচিব শাহ আলম এই অর্থের জিম্মাদার হিসেবে বহাল থাকাবস্থায় ওই হিসাব থেকে ৫০ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

২০০৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল ইসলাম রমনা থানায় রেদোয়ান আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের তৎকালীন চেয়ারম্যান কবির আহমেদ ও মহাসচিব শাহ আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তদন্তের পর ২০০৭ সালের ৮ অক্টোবর দুদকের সহকারী পরিচালক মোহা. আবুল হোসেন আসামি রেদোয়ান ও শাহ আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।