জিয়া ও এরশাদ ‘স্বৈরাচার’ এবং তার পরের রাজনীতি

৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় এ নিবন্ধ লেখার সময় থেকে থেকেই মনে হচ্ছে, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ কী এমন দোষ করেছিলেন যে, তাকে আমরা ‘স্বৈরাচার’ বলে এখনও এমন ভাব করছি যেন আর কোনও স্বৈরাচার দেখিনি। আমাদের আর সব কিছুই কমবেশি গণতান্ত্রিক!

এটা ঠিক, নানা কূটকৌশলে তিনি রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিলেন সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে। এরশাদ অবশ্য বলে থাকেন, তিনি রক্তপাতের আশ্রয় নেননি। আশ্রয় নিতেন হয়তো, প্রয়োজন হলে। তা হয়নি। রক্তপাত আসলে ঘটে গিয়েছিল আগেই, যাতে নৃশংসভাবে নিহত হন মুক্তিযুদ্ধের দুই বীর উত্তম—জিয়াউর রহমান ও এম এ মঞ্জুর। এসবে এরশাদের কী ভূমিকা ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে এবং এর নিষ্পত্তি হয়নি।

এরশাদের আগে জিয়াও রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন সেনাবাহিনীর ভেতর থেকে। বন্দিদশা থেকে তাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। দৃশ্যত তিনি কোনও অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেননি বা যুক্ত হননি। তবে এর সুফল ছিনিয়ে নিতে কুণ্ঠা ছিল না তার। সেজন্য ‘বিশ্বাসঘাতকতা’রও আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে অনেকে মনে করেন।

জিয়ার শাসনামলে বেশ কিছু অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থান হয় সেনাবাহিনীর ভেতরে। সেগুলো নিষ্ঠুরভাবে দমন করেন তিনি। সেনাবাহিনীতে যারা দলীয় রাজনীতির অনুপ্রবেশ ঘটান—এসব অভ্যুত্থান তারই পরিণতি বলে মনে করা হয়। এরই মধ্যে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা নিহত হন সপরিবারে। তাতে রাজনীতির দৃশ্যপট বদলে যায়।

জিয়াও নিহত হন একটি অসংগঠিত সেনা অভ্যুত্থানে।  ততদিনে তার হাতে তৈরি বিএনপির ভেতরে তৈরি হয়েছিল অস্থিরতা। তার অনুপস্থিতিতে সেটা আরও বেড়ে ওঠে। ‘দেশ পরিচালনায় সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ’ দাবি করতে থাকেন তৎকালীন সেনাপ্রধান এরশাদ। যাহোক, পরিপূর্ণ সেনা সমর্থন নিয়েই তিনি রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন।

তিনি যে অসাংবিধানিক শাসক ছিলেন, সেটা নিজে কখনও অস্বীকার করেননি। জিয়াও তা-ই ছিলেন। সর্বোচ্চ আদালতের রায়েও এ প্রশ্নের নিষ্পত্তি হয়েছে বলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বলছেন, জিয়াকে সাবেক ‘রাষ্ট্রপতি’ বলা যাবে না। এরশাদও তাহলে তা-ই। অবশ্য তিনি এখন ‘প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত’ হয়ে রয়েছেন মন্ত্রীর মর্যাদায়।

অবৈধ বা স্বৈরশাসক হলে তাদের সব কর্মই কুকর্ম হবে, এমন কোনও কথা নেই। যেমন, জিয়া সম্বন্ধে বলা হয়, তিনি ব্যক্তিগতভাবে সৎ ছিলেন। সত্যিই, তার অসততার সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলে না। যেমনটা এরশাদের ক্ষেত্রে ভালোভাবেই পাওয়া যায়। তিনি ব্যক্তিগতভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে একটা ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল তার শাসনামলেই। তবে জিয়া রাজনীতিকে দুর্নীতিগ্রস্ত করেছিলেন।

এর আগেও রাজনীতিতে দুর্নীতি ছিল। তবে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে রাজনীতিকে দুর্নীতিগ্রস্ত করার কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেন জিয়া। বাকশাল প্রতিষ্ঠার কিছুদিন পর বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে ক্ষমতায় এসে সেটা সংহত করে তিনি ‘বহুদলীয় রাজনীতি’তে ফিরে আসার একটা প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন বৈকি। জিয়ার সমর্থকরা এটা খুব বলে থাকেন। কিন্তু তারা বলেন না, এর বিকল্প কী ছিল? জিয়া নিজের দল গঠন করেন রাষ্ট্রক্ষমতায় অবস্থান করে, যা থেকে একটি রাজনৈতিক ধারারও জন্ম বা পুনর্জন্ম হয় বলে অনেকের ধারণা।

বহুদলীয় রাজনীতির সুযোগে আওয়ামী লীগও পুনর্গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু তো বাকশালের মধ্যে তার দলকেও বিলুপ্ত করেছিলেন। সিপিবিও স্বেচ্ছায় বিলুপ্ত হয়েছিল বাকশালে। তারা একে হয়তো ‘বিপ্লবের পর্যায়ভুক্ত’ ভেবেছিলেন। বাকশালকে অনেকে সোভিয়েত ব্লকের চিন্তাভাবনার একটা পরিণতি বলে মনে করেন। তখন অনেক দেশেই ‘অধনবাদী পথে’ সমাজতন্ত্রে পৌঁছার একটা প্রচেষ্টা ছিল। বাকশালও ছিল তেমন কিছু।

উদারনৈতিক গণতন্ত্রে বিশ্বাসীরা অবশ্য বলবেন, এর মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু একটা ‘গণতান্ত্রিক স্বৈরাচার’ কায়েম করেছিলেন। কেননা যেভাবেই হোক, সংসদে এটা পাস করিয়ে নেন তিনি। এ পদক্ষেপ বিতর্কিত ছিল এবং এখন আওয়ামী লীগও এটা নিয়ে আর গর্ব করে না। তবে বঙ্গবন্ধুর কোনও পদক্ষেপই ১৫ আগস্টের পট পরিবর্তনকে যৌক্তিকতা দেয় না। তার বিচারও এর মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে কয়েকজন অপরাধীর।

বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু যদি স্বৈরশাসকে রূপান্তরিত হয়ে গিয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রেও তাকে রাজনৈতিক প্রচেষ্টা তথা আন্দোলনের মাধ্যমে হটানো যেত। এরশাদ তো সুনিশ্চিতভাবে স্বৈরশাসক ছিলেন। একনাগাড়ে সবচেয়ে বেশিদিন দেশ পরিচালনা করে অবশেষে আন্দোলনের মুখেই পদত্যাগে বাধ্য হন তিনি। শাসক বঙ্গবন্ধুর ক্ষেত্রেও এটা ঘটতে পারতো। সে ক্ষেত্রে আমাদের ইতিহাস অন্যরকম হতো সন্দেহ নেই।

সেনা অভ্যুত্থানে নিহত না হলে গণতন্ত্রের পোশাক পরা সেনাশাসক জিয়ার ক্ষেত্রেও এটা ঘটতে পারতো। এমনটা বলছি এজন্য যে, প্রায় একই পদ্ধতিতে দেশ পরিচালনাকারী এরশাদের ক্ষেত্রে তো এটাই ঘটেছে। জিয়ার মতো তিনিও দল গঠন করেন রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে। তবে নতুন কোনও রাজনৈতিক ধারার জন্ম দিতে পারেননি বলতে হবে। তেমন সচেতন প্রয়াস তার মধ্যে ছিল বলেও মনে হয় না।

বিএনপিকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলপূর্বক তা সংহত করেছিলেন বলে এ দলভুক্তদের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল বেশি। রাজনৈতিক চিন্তাধারায় তিনি অবশ্য বিএনপির কাছাকাছি এবং আওয়ামী লীগ থেকে দূরে। এ অবস্থায় কখনও কখনও মধ্যপন্থার আশ্রয় নেন এরশাদ বা ‘বিরাজনীতিকরণের’ প্রয়াসও নেন মাঝে মাঝে। তার সময়ে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের উদ্যোগ লক্ষণীয়। ছাত্র-তরুণদের ভেতর থেকেই তিনি অবশ্য প্রতিরোধের মুখে পড়েন, রাজনীতিকদের আগে।

এদিকে জিয়া ছাত্র-তরুণদের একাংশে জায়গা করে নিয়েছিলেন। সাধারণেও তিনি অর্জন করেছিলেন জনপ্রিয়তা। আওয়ামীবিরোধী জনগোষ্ঠী তাকে সমর্থন জোগাতে যেন অপেক্ষমাণ ছিল। তিনিও উপস্থাপন করেছিলেন তাদের পছন্দসই রাজনীতিটা। এর আওতায় ‘স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি’গুলোও ফিরে আসে। জিয়ার হাতে গড়া দল আর সরকারেও এরা লাভ করেন গুরুত্বপূর্ণ স্থান।

অধনবাদী পথে বিকাশের বাকশালী প্রয়াস বাদ দিয়ে তিনি অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বাড়িয়ে তোলারও পদক্ষেপ নেন। এটাও দেশে-বিদেশে তার ক্ষমতা সংহতকরণে শক্তি জোগায়। ইতোমধ্যে গঠিত ব্যক্তিপুঁজির বিকাশের তাগিদ সাইফুর রহমানসহ তার কয়েকজন সহকর্মী নাকি ঠিকঠাক বুঝতে পেরেছিলেন। বেসরকারি খাতকে দ্রুত বিকাশের সুযোগ করে দিতে উদারভাবে ঋণদানসহ তারা নেন কিছু বিতর্কিত পদক্ষেপও।

অপর সেনাশাসক এরশাদের সময় এবং তার পরে এখনও মোটামুটি একই ধারায় অর্থনীতি পরিচালিত হচ্ছে। এতে পাওয়া যাচ্ছে সুফলও। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কিন্তু স্বৈরশাসক বা নির্বাচিত গণতান্ত্রিক শাসকে তেমন তফাৎ দেখা যাচ্ছে না। বরং পরিলক্ষিত হচ্ছে একটা ধারাবাহিকতা। যেমন ধারাবাহিকতা রয়েছে জিয়া ও এরশাদের গোটা শাসনামলে।

রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হওয়ার প্রক্রিয়ায় একটু ভিন্নতা থাকলেও এরশাদ এর পর জিয়াকেই অনুসরণ করেছেন। রাজনৈতিক দল গঠনে ছিল প্রায় একই প্রক্রিয়া। বিতর্কিত নির্বাচন অনুষ্ঠানেও সাযুজ্য ছিল। তবে এরশাদকে অনেক বেশি বাধার সম্মুখীন হতে হয় শিক্ষাঙ্গন ও রাজনৈতিক দল থেকে। ততদিনে দেশ আবার রাজনীতিতে ফিরে এসেছে। আওয়ামী লীগ সংহত বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আর বিএনপিতেও এসে দাঁড়িয়েছেন জিয়ার বিধবা স্ত্রী খালেদা জিয়া। এরশাদকে ক্ষমতা থেকে নামানোর প্রশ্নে তাদের মধ্যে ঐক্যও গড়ে উঠল। বামদের নিবিড় অংশগ্রহণ ছিল এ প্রক্রিয়ায়।

এরশাদ নাকি এতদিন ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে পারতেন না—প্রতিশ্রুতি ভেঙে আওয়ামী লীগ ১৯৮৬’র নির্বাচনে না গেলে। সে প্রক্রিয়া থেকে সরে আসতে তারা দেরি করেননি অবশ্য; কিন্তু ততদিনে বেগম জিয়ার ‘আপসহীন’ ভাবমূর্তি তৈরি হয়ে গেছে। সেটা বিএনপিকে সুফল দিয়েছিল এরশাদ পতনের পর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে। ওটা আবার নাকি ছিল বিএনপিকে অন্যায়ভাবে ক্ষমতা থেকে হটানোর রাজনৈতিক জবাব। নির্বাচনটি সুষ্ঠুভাবেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরাস্ত আওয়ামী লীগের আপত্তি তাই গ্রহণযোগ্য হয়নি।

ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক এরশাদ তখন জেলে। নাগরিক সমাজে তিনি তখন ঘৃণিত। মিডিয়ায়ও তার নাম ভদ্রভাবে নেওয়া হয় না। সামরিক স্বৈরশাসক হিসেবে জিয়াও যদি একইভাবে ক্ষমতাচ্যুত হতেন, তারও কী এমন পরিণতি হতো? এটা আসলে নিশ্চিত করে বলা যায় না। এ নিয়ে আমরা ভেবেছিও কম। জিয়ার রাজনীতিটা ততদিনে গুছিয়ে নিয়েছেন বেগম জিয়া। জামায়াতের সঙ্গে সখ্য করে চলতেও শুরু করে দিয়েছেন।

এদিকে এরশাদের জাতীয় পার্টিকে (জাপা) কাছে টানতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। তাদের অবশ্য প্রত্যাশা ছিল নির্বাচনে জিতে যাওয়ার। সেটি না হয়ে যে ফল দাঁড়াল, তাতে স্পষ্টই দেখা গেল–এককভাবে ক্ষমতায় ফিরে যাওয়া দলটির পক্ষে কঠিন। ‘গণআন্দোলনে’ ক্ষমতাচ্যুত হয়ে কোণঠাসাভাবে অংশ নিলেও জাপা কিন্তু খারাপ করেনি ১৯৯১’র নির্বাচনে। উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন অংশে তাদের জনসমর্থন ভালোই দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। তখন এমন কথাও অনেকে সাহস করে বলেন যে, এরশাদবিরোধী আন্দোলন তো ছিল শহরকেন্দ্রিক।

খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন বিএনপির প্রথম শাসনামলে জাপাকে রাজনৈতিক নিপীড়নেরও মুখোমুখি হতে হয়। নাগরিক সমাজেও দুর্ভাগ্যবশত এর কোনও প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এতে এরশাদ ও তার অনুসারীরা নতুন করে সহানুভূতি পেয়েছিলেন, সেটাও বলতে হবে। অব্যাহত রাজনৈতিক ডিগবাজি সত্ত্বেও উত্তরবঙ্গ, বিশেষত রংপুরকেন্দ্রিক অঞ্চলে এরশাদ এখনও সাধারণের মধ্যে জনপ্রিয়।

দুর্নীতিসহ কৃতকর্মের জন্য এরশাদ জেল খেটেছেন দীর্ঘদিন। বৃদ্ধ বয়সে পুনরায় জেলে যাওয়ার ভয়ে তিনি সিদ্ধান্ত পাল্টেছেন রাতারাতি, এমনটিও রয়েছে। সেটা তার সমর্থকরা কীভাবে নিচ্ছেন, কে জানে।  তবে এরশাদের ওপর থেকে তার বিরোধীদের ক্রোধ যায়নি এখনও। তারা মনে করেন, এরশাদের ‘যথেষ্ট শাস্তি’ এখনও হয়নি। তার স্ত্রীকেও কিন্তু জেলে থাকতে হয়েছিল। এখন তিনি অবশ্য সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রী।

এরশাদকে যে পদ দেওয়া হয়েছে, তাতে তিনি স্বভাবতই সুখী নন। তিনি তো ‘রাষ্ট্রপতি’ ছিলেন। দাপুটে সেনাশাসক। তাকে হটাতে একের পর এক আন্দোলন হয়েছিল; সেটা দমনও করেন তিনি। শেষে আর পারেননি। সেনাবাহিনীও তার সমর্থন থেকে সরে দাঁড়ায়। একটা পর্যায়ে ‘গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তন’ আসলে অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। গণতন্ত্রে নয়, নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায়। এরশাদ পতনের ভেতর দিয়ে আসলে এটুকুই অর্জন করেছি আমরা।

তার বিরুদ্ধে আন্দোলন রচনাকারী তিন জোটের রূপরেখাটি বস্তুত হারিয়ে ফেলেছে সবাই। পাঁচদলীয় বাম জোটের উদ্যোগেই এটি প্রণীত হয়েছিল বলে জানি। তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে পারলে কী হতো, কে জানে। তবে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা-যাওয়া করা দল দু’টি ওটার প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধা দেখিয়েছে বলেও মনে হয় না। ৬ ডিসেম্বর এরশাদ শাসনের অবসানের দিনে মিডিয়াই কেবল এ প্রশ্ন সামনে আনে।

দৃশ্যতই কোনও রক্তাক্ত পথে ক্ষমতায় আসেননি এরশাদ। অনেকে বলেন, সেজন্যই তার প্রস্থান জিয়ার মতো হয়নি। এরশাদ বেঁচে আছেন আজও। তিনি আরও বাঁচুন। এর মধ্যে তার দলটি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরশাদ সাহেবের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তাও কমেছে বোধহয়। তিনি এককভাবে ক্ষমতায় ফিরে আসবেন, এটা এরশাদের কঠিন সমর্থকও মনে হয় না বিশ্বাস করে। তা সত্ত্বেও রাজনীতিতে তিনি ‘ফ্যাক্টর’ হয়ে আছেন।

তার দলকে বিরোধী দল বানিয়ে দিব্যি দেশ চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এদিকে উপর্যুপরি ভুল করে ও ব্যর্থ হয়ে জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও জিয়া প্রতিষ্ঠিত দলটি ময়দানে এখন কোণঠাসা। বিএনপি নেতৃত্বও প্রশ্নের মুখে। সামনে কীভাবে কী হবে, সে হিসেব মেলাতে হচ্ছে নতুন করে। সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদও এ ক্ষেত্রে নাবালক বলা যায়। তাকে ‘স্বৈরাচার’ বলে আলাদা করে গাল দেওয়ার সুযোগও ইতোমধ্যে কমে এসেছে।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
সৌজন্য: হাসান মামুন