কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষকরা জড়িত, তাদেরকে গ্রেফতার করা হোক: হাছান মাহমুদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কোটা পদ্ধতি সংরক্ষণ বা কোটা পদ্ধতি বাতিলের কোনোটায়ই নাই। তাহলে কেন তার বাসভবনে হামলা চালানো হলো? নিশ্চয়ই শিক্ষকদের একটি অংশ এর সাথে জড়িত। তাদেরকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। এমন দাবী জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণায় বিএনপির ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেছেও মনে করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে এক আলোচনা সভায় হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেছেন, এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে সরকারের পরাজয় নয় বরং সরকারের জয় হয়েছে। যারা আন্দোলন করেছে তারা বঙ্গবন্ধুর ছবি হাতে নিয়ে, প্রধানমন্ত্রীর ছবি হাতে নিয়ে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিয়ে কোটা বাতিলের কথা বলেছে।
বিএনপি-জামায়াত তাদের পেট্রোল বাহিনীকে কোটা আন্দোলনে ঢুকিয়েছিল দাবি করে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বলেন, ‘আপনার সবাই গতকাল দেখেছেন এবং শুনেছেন তারেক রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক মামুনের সাথে কথা বলেছেন। তিনি ইনস্ট্রাকশন দিচ্ছেন কীভাবে এই আন্দোলনে একটু বাতাস দেয়া যায়, সেটা চেষ্টা করার জন্য।
তখন মামুন সাহেব বলছেন সেটা আমরা আগে খেয়াল করিনি আপনি বলার পরে এটা আমাদের নজরে এসেছে। অর্থাৎ এ আন্দোলনের বাতাস দিবো।’
‘আমি মনে করি মামুন সাহেবকে গ্রেপ্তার করা প্রয়োজন,’ বলেন হাছান মাহমুদ, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে কারা হামলা চালিয়েছে, এই মামুনকে গ্রেপ্তার করা হলে এই তথ্য দিতে পারবেন। তারেক রহমান ইনস্ট্রাকশন দেয়ার পরে সম্ভবত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির বাসভবনে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ চালানো হয়েছে।’
মওদুদ আহমেদরা কোটা অন্দোলনকে পুঁজি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চেয়েছিলেন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এই মুখপাত্র বলেন, তারা দেশের মাটি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, অর্থাৎ তাদের রাজনৈতিক পরাজয় হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার মাধ্যমে।
কোটা বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকে সবসময় ছিল জানিয়ে সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, কোটা সংস্কার সবসময় হয়ে আসছে। কোটা সংস্কার ভবিষ্যতেও হবে। ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন এবং সেই সাথে প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য আলাদা বিশেষ ব্যবস্থা করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে ঘোষণা দিয়েছেন। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাই।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি’র গণবেদনা সেখানেই যে, তারা সব আন্দোলনে ব্যর্থ। তারা একটি পরগাছা দল। যখন তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটি নামে আন্দোলন করা হলো তখন সেই কমিটিতে বিএনপি শরিক হয়ে আন্দোলন করার চেষ্টা করেছিল। সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তারা নিজেরা বহু আন্দোলন করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে।’তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া তার নেতাদের বিশ্বাস করেন না, নেতাদেরকে তাদের কর্মীরা বিশ্বাস করে না। তাই তাদের ডাকে কেউ সাড়া দেয় না। বিএনপির সব কিছু ভেসে গেছে, তাই অন্যরা কিছু করলে সেখানে খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়।’
সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘এখানে যে দাবি জানানো হয়েছে তার মধ্যে পাঁচটি মামলা প্রত্যাহার করার দাবি রয়েছে। তাহলে কি ভিসির বাসভবনে যারা হামলা চালিয়েছে তাদের বিচার হবে না? আমি বরং সরকারকে অনুরোধ জানাবো এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হোক। সেই সাথে জড়িতদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক।