কোটার দাবিতে আসিনি, সম্মান অক্ষু্ণ্ণে আইন প্রণয়ের দাবি নিয়ে এসেছি
আমরা কোটার দাবিতে আসিনি, আমরা এসেছি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান অক্ষু্ণ্ণ রাখা এবং তাদের পরিবারকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আইন প্রণয়ের দাবি নিয়ে। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের যারা হয়রানি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ছয় দফা দাবিতে গণসমাবেশ করেছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা। এ দাবি আদায়ে পাঁচ দফা কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়।
রোববার শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম সমন্বয় জাতীয় কমিটির ব্যানারে আয়োজিত এ গণসমাবেশ থেকে কমিটির সভাপতি মেহেদী এসব কথা হাসান বলেন।
‘এই সরকার শেখ হাসিনার সরকার। আমরা জানি তিনি কোনো ন্যায্য দাবি ফেরান না। তাই আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা, আমরা কোনো কোটা নিয়ে দাবি করছি না। আমাদের দাবি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখা’, সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বলেন মেহেদী হাসান।
সমাবেশ থেকে ছয় দফা দাবিসহ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।
ছয় দফা দাবি
১. বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান অক্ষুণ্ন ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা। সম্প্রতি যারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের নানাভাবে হয়রানি করছে তাদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।
২. যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের স্থাবর অস্থাবর সকল সম্পদ ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের আয়ত্তে আনা।
৩. যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের তালিকা প্রকাশ এবং তাদের সন্তান ও প্রজন্মকে ১০ পুরুষ পর্যন্ত সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত সকল প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষণা করা এবং স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যাবধি যারা সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পেয়েছে তাদের নিয়োগ বাতিল করা।
৪. কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যানার ব্যবহার করে নেপথ্যে থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ অবমূল্যায়ন, বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার নিয়ে কটুক্তি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচর্যের বাসভবনে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ভাংচুর এবং শারিরিকভাবে নির্যাতন করে প্রাণনাশের চেষ্টা এবং সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী এবং উস্কানিদাতা তারেক রহমানসহ সকল ব্যক্তি ও সংগঠনসমুহের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।
৫. যে সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপপ্রচার চালিয়ে দেশে অরাজকতা ও অশান্তি সৃষ্টি করেছে তাদের অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
৬. বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যে সকল প্রতিক্রিয়াশীল শিক্ষকগণ নেপথ্যে থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মদদ দিয়েছে অনতিবিলম্বে তাদের অব্যাহতিসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা।
নতুন কর্মসূচি
১. আগামী ২৫ এপ্রিল বেলা ১১টায় সব জেলা/উপজেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দাবীনামা পেশ।
২. ৩০ এপ্রিল একই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সকল জেলা-উপজেলার প্রতিনিধিদের নিয়ে সম্মিলিতভাবে দাবিনামা পেশ।
৩. ৮ মে সংবাদ সম্মেলন।
৪. নিবন্ধিত সকল রাজনৈতিক দলসমুহকে লিখিতভাবে দাবি সমুহের সঙ্গে একমত পোষণ করেন কিনা এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধী বা সন্তান ও প্রজন্মকে মনোনয়ন দেবে কিনা লিখিতভাবে অবগত করার অনুরোধপত্র প্রদান কর্মসূচি।
৫. ৯ জুন বিকেল তিনটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তান-প্রজন্মকে নিয়ে মহাসমাবেশ।
সমাবেশ শেষে একটি প্রতিবাদী মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে শপথ বাক্য পাঠ করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা।