আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সমর্থন করেনি, বিরোধীতা করেছে, তাদের মুখোশ আজ উন্মোচিত হয়েছে। বাংলাদেশে বাস করেও তারা পাকিস্তানের সেবা দাস। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তারা ৭ মার্চ মানে না, তারা মুক্তিযুদ্ধ মানে কিনা সন্দেহ আছে’।
মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ১৭ই এপ্রিল মুজিবনগর দিবসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন: আজ প্রমাণ হয়ে গেছে, বিএনপি মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করে নির্বাচনের সময়। তারা মুক্তিকযুদ্ধকে চেতনায় লালন করে না।
তিনি প্রশ্ন রাখেন: যারা ক্ষমতায় এসে জাতির পিতার হন্তারকদের পুরস্কৃত করে আমরা তাদের মুক্তিযোদ্ধা বলে স্বীকার করি না। তারা শুধু নির্বাচনের ইশতেহারে মুক্তিযুদ্ধোকে ব্যবহার করে, মানুষকে প্রতারিত করে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বলেন: তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকেও হত্যার চেষ্টা করেছিলো। ২১ আগস্ট বিএনপির সরকার আমাদের নেত্রীকে হত্যার চেষ্টা করেছিলো। তাদের যুবরাজ তারেক রহমান এখন টেমস্ নদীর পাড়ে বসে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
তারা ৯ বছর ধরে আন্দোলনের ডাক দিয়েও ৯ মিনিটের জন্য রাস্তায় দাঁড়াতে পারেনি। আমারা বাধাও দেইনি। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে তারা এখন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ওই তারেক রহমান সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপ দেওয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছিল। আমরা দেখেছি, তারেক রহমান লন্ডনে বসে এ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছে। তার একটি অডিও টেপ আমরা শুনেছি।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর ছাত্ররা যখন ফিরে গেলো তখন বিএনপির নেতৃত্ব চুপসে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সমাবেশে অন্যন্যের মধ্যে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন: মানুষকে মারা যায় কিন্তু তার স্বপ্নকে কখনও মারা যায় না। বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তার স্বপ্ন বেঁচে আছে। সেই স্বপ্ন এগিয়ে নিচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে প্রবেশ করেছে। এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার পাশে আমাদের থাকতে হবে। কোন ষড়যন্ত্র যেনো এ অগ্রযাত্রা রুখে দিতে না পারে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন: যে বাংলাদেশর স্বপ্ন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশকে সেই দেখানো পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
একটি চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের মধ্যদিয়ে তাদের চালানো এ অপচেষ্টা কখনও সফল হবে না। কোন ষড়যন্ত্রের কাছে শেখ হাসিনার সরকার মাথানত করবে না বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন তিনি।
খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন: যারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কটাক্ষ করে, শহীদ সংখ্যা নিয়ো প্রশ্ন তোলে তাদের এ দেশের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে।
বিএনপির দিকে অভিযোগ ছুঁড়ে দিয়ে তাদের অগণতান্ত্রীক আচরণ রুখে দিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি। বলেন: দলটি আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন স্বীকার করে না। তারা এখন নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা করছে। তাদের এ অপচেষ্টা রুখে দিতে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।
দলটির অন্যতম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক তার বক্তব্যে বলেন: জিয়াউর রহামন-মোস্তাক আহমেদ-এরশাদেরা ১৭ এপ্রিলকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিলা, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যদিয়ে। তারা এ দেশকে পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিলো। কিন্তু এ দেশের জনগণ সেটি মেনে নেয়নি। জাতির জনকের মেয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে ওই জামায়াত-বিএনপি সরকারকে উৎখাতে বারবার অপচেষ্টা করছে। তারেক রহমান লন্ডনে বসে সাধারণ ছাত্রদের আন্দোলন ভিন্ন খাতে নেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমাদের এসকল অপচেষ্টা রুখে দিতে সতর্ক থাকতে হবে।
এ কে এম রহমতউল্লাহ এমপির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন এডভোকেট সাহারা খাতুন, এডভোকেট অাব্দুল মতিন খসরু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অাসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক অাহমদ হোসেন, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দপ্তর সম্পাদক অাব্দুস সোবহান গোলাপ, দুর্যোগ ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীসহ অনেকে।