নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিএস-২১১ ফ্লাইটের উড়োজাহাজে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না বলে ইউএস বাংলার কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। এছাড়া পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন। সম্প্রতি উড়োজাহাজটির বিধ্বস্ত হওয়ার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের সিইও ইমরান আসিফ।
বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনার জন্য নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দায়ী বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ। ইউএস বাংলার দাবি, ত্রিভুবন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ইউএস-বাংলার বিমানকে দেয়া ল্যান্ডিং ক্লিয়ারেন্স বাতিল না করে একই সময়ে অন্য এয়ারলাইনসের ফ্লাইট অবতরণের অনুমতি দিয়ে আন্তর্জাতিক নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে।
সিইও বলেন, ‘নেপাল ও বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন জানিয়েছেন, দুর্ঘটনা কবলিত প্লেনটিতে কোনো টেকনিক্যাল ত্রুটি ছিল না। ইউএস-বাংলার নিজস্ব প্রতিবেদনেও কোনো কারিগরি ত্রুটি ছিল না বলে প্রতিয়মান হয়। এছাড়া ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন। তার অবসাদগ্রস্ত হওয়া কিংবা জোর করে পাঠানোর বিষয়টি অবান্তর।’
ইমরান আসিফ বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, দুর্ঘটনার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য ও ছবি প্রকাশ করে। বলা হয়েছে বিমানটি পুরানো ছিল, পাইলটকে জোর করে পাঠানো হয়েছে, তিনি অবসাদগ্রস্ত ছিলেন। তবে এসব তথ্য সঠিক নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী একজন পাইলট দৈনিক ১৪ ঘণ্টা ডিউটি করতে পারেন। রুল অনুযায়ী তিনি ১১ ঘণ্টা ফ্লাই করতে পারেন। দুর্ঘটনার দিন যদি আবিদ ফ্লাইট নিয়ে ঢাকায় ফিরে আসতো তাহলে তার ফ্লাইং আওয়ার ৭ ঘণ্টার কম হতো। তার ক্যারিয়ারের মোট ফ্লাইং আওয়ার প্রায় ৬ হাজার ঘণ্টা।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ ৩৪ বছর পর বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘটে প্রাণ সংহারকারী উড়োজাহাজ দুর্ঘটনাটি। ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিএস ২১১ বিমানটি নেপালের কাঠমুন্ডুতে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ল্যান্ড করতে যায় এবং ক্রাশ করে। এতে এখন পর্যন্ত নিহতের তালিকায় আছেন ৫১ জন, যাদের মধ্যে ২৬ জনই বাংলাদেশি।